অবতক খবর,৩১ মার্চ,সুমিত,হাওড়া: কিশোরী মেয়ের ওপর শারীরিক নিগ্রহ সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে মা খুন করলেন স্বামীকে। চাঞ্চল্যকর এমন অভিযোগ ডোমজুড়ের পার্বতীপুরে। ডোমজুড় থানার পুলিস এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছে মা এবং মেয়েকে।

বুধবার রাতে ডোমজুড়ের পার্বতীপুরে সোনার দোকানের মালিক শেখ সালাম (৫৫) নিজের বাড়িতেই খুন হন। বিবাহিত শেখ সালাম এর আগে মুম্বইতে থাকলেও কয়েক বছর ধরে ডোমজুড়ে থাকছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও তাঁর কিশোরী মেয়ে। বুধবার রাতে তাঁর স্ত্রী সুলতানা বেগম প্রতিবেশীদের ঘরে ডেকে আনেন। তাঁরা ঘরে ঢুকে দেখেন, শেখ সালাম বিছানার ওপর পড়ে রয়েছেন। গলায় কালো দাগ। কেউ তাঁর স্বামীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে বলে দাবি করেন স্ত্রী।

মৃত ব্যক্তির স্ত্রী সুলতানা প্রতিবেশীদের কাছে আরও বলেন, সন্ধ্যাবেলায় দুজন লোক তাঁদের বাড়িতে আসার কথা ছিল। সেই কারণে আগেই শেখ সালাম তাঁদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এরপর তাঁরা আত্মীয়র বাড়ি বেরিয়ে যান। আধঘন্টা বাদে তাঁরা যখন ঘরে ফেরেন, তখন দেখেন শেখ সালামের মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে জিভ। প্রতিবেশীদের ডাকলে তাঁরাও দেখেন, মৃত অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ডোমজুড় থানার পুলিস। মৃতদেহ উদ্ধারের পর মা এবং মেয়েকে থানায় আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। এর পরেই জেরায় ভেঙে পড়েন ওই দুজন। ঘটনাটিকে যদিও প্রথমে তাঁরা অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে সাজাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পরে পুলিসের জেরার মুখে দুজনই নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেন। পুলিস সূত্রে খবর, মুখোমুখি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করলেও ক্যামেরার সামনে অপরাধের কথা স্বীকার করেননি মা ও মেয়ে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের।

কিন্তু মা ও মেয়ে কেন এমন কাজ করলেন? পুলিশ জানিয়েছে, গত দু’মাস ধরে সৎ মেয়ের উপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। নিজের মেয়ের উপর সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েই স্বামীকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন ওই মহিলা। পরিকল্পনায় সঙ্গী করেন তাঁর নির্যাতিত কন্যাকেও। তবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দাবি, সম্পত্তির লোভে তাঁকে খুন করা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ সত্যি নয়।
পুলিস একটা খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ সত্যি কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন পুলিস।