অবতক খবর,সংবাদদাতা,মালদা,১৭ই মে:: আর কয়েক মাস বাদেই পঞ্চায়েত ভোট, আর এরই মধ্যে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল আবার মাথাচাড়া দিল। গতকাল রাত্রে বাড়ির উঠোন থেকেই এক তৃণমূলের সক্রিয় কর্মীকে মুখে কাপড় বেঁধে অপহরণের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ এলাকারই অপর তৃণমূলের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। অপহৃত ব্যক্তির স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অপহৃত পরিবারের লোকের দাবি খুন করা হয়েছে অপহরণ হওয়া আব্দুল বারিককে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কাতলামারি এলাকায়। ওই এলাকায় বাশির ও উনসাহাক গোষ্ঠীর এলাকা দখলকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ রয়েছে। বাশির ও তার দলবল উনসাহাকের ভাইপো আব্দুল বারিককে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ। কয়েকমাস আগেই দুই গোষ্ঠীর গুলির লড়াইয়ে দু জন গুলিবিদ্ধও হন। এবার উনসাহাকের ভাইপো বারিককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে বলে তার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে।

উনসাহাক আগে কংগ্রেস ও বাশির সিপিএম করলেও পালাবদলের পর দুই গোষ্ঠীই আপাতত শাসকদলের ছত্রছায়ায় রয়েছে বলে অভিযোগ। বারিককে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে বলে বারিককের পরিবার দাবি করলেও তা পুলিশ মানতে চায়নি। কেন না এখনও বারিকের খোঁজ মেলেনি। তার খোঁজে সর্বত্র তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাদের বাড়িতে তালা ঝুলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও গোটা ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। অন্যদিকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এটা তো ট্রেলার চলছে, পঞ্চায়েত ভোট আসতে আসতে অনেক কিছু দেখতে পাওয়া যাবে। কাটমানির সরকার, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত গোটা রাজ্য, মানুষ যোগ্য জবাব দেবে খোঁচা জেলা বিজেপি কিষান কেডিয়ার। অপরদিকে কার্যত গোষ্ঠী কোন্দলের কথা স্বীকার করে নিয়েছে তৃণমূল ব্লক সভাপতি। অন্যায় করলে দল পাশে দাঁড়াবে না আইন আইনের পথে চলবে পুলিশ পুলিশের কাজ করবে বলে সাফাই তৃণমূল ব্লক সভাপতি হজরত আলীর।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাম আমলে সিপিএমের ছত্রছায়ায় ছিল বাশির! উনসাহাক ছিল কংগ্রেসে। এলাকা দখলকে ঘিরে গত তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের বিবাদ চলছে। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ ও গুলির লড়াইয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ২০১০ সালে দুই গোষ্ঠীর গুলির লড়াইয়ে গুলি লাগে উনসাহাকের। তবে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। একসময় উনসাহাকের ছেলে ও মেয়েও গুলিবিদ্ধ হয়। ছ মাস আগে খাড়াগ্রামে দু পক্ষের গুলির লড়াইয়ে গুলিবিদ্ধ হয় উনসাহাকের ছেলে ও ভাইপো। দু পক্ষের একাধিকবার সংঘর্ষে অবশ্য শুধু উনসাহাকের লোকজনই নয়, গুলিবিদ্ধ ও আহত হয় বাশিরের পক্ষের লোকজনও। তারপরেই ফের অপহরণের ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

উনসাহাক গোষ্ঠীর অভিযোগ, শনিবার রাতে মুখে কাপড় বেঁধে বাশির ও তার দলবল নিয়ে উনসাহাকের ভাইপো আব্দুর বারিকের বাড়িতে চড়াও হয়। তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দেয় স্ত্রী সায়েমা বিবি। বাধা দেওয়ায় তার স্ত্রী সায়েমা বিবিকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। তাদের মারধরে সায়েমা অচেতন হয়ে পড়েন। অভিযুক্ত আব্দুল বাসিরের গোষ্ঠীর লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে কোনো রকম ভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অপহৃত বারিকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’