অবতক খবর,১৮ আগস্ট,পূর্ব বর্ধমান:মারধোরের পর মুখে বিষাক্ত কিছু ঢেলে দিয়ে
সৎ মাকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হল ছেলে ও বৌমা।

মাতৃ হত্যার এই নজিরবিহীন ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার কালাড়াঘাট গ্রামে।

পেশায় আশা কর্মী মা মণিকা বোসকে খুনের অভিযোগে ধৃতরা হল ছেলে সুভাষ বোস ওরফে বাবাই ও বৌমা আল্পনা বোস। মৃত ও ধৃত সকলেরই বাড়ি কালাড়াঘাট গ্রামে।

বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ মর্গে মৃতার দেহের ময়না তদন্ত হয়।

অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি করেছেন মৃতার বাবা কাশিনাথ নন্দী ও তাঁর পরিজনরা।
মৃতা আশা কর্মী মণিকা বোসের বাপের বাড়ি
জামালপুর থানার সন্নিকটে হাওয়াখানা পাড় এলাকায়।

মণিকাদেবীর বাবা কাশীনাথবাবু এদিন জানান,কালাড়াঘাট নিবাসী দিলীপ ঘোষের স্ত্রী তাঁর পুত্রসন্তান সুভাষকে জন্ম দেওয়ার কয়েক বছর বাদ মারা যান।

এরপর সংসার সামলানো ও নাবালক সন্তান সুভাষকে প্রতিপালনের জন্য ব্যবসায়ী দিলীপ বোস পুনর্বিবাহের মনস্থির করেন।

বছর ১৬ আগে তাঁর মেয়ে মণিকার সঙ্গে বিয়ে হয় দিলীপ বোসের।

মণিকা নিজে নিঃসন্তান থেকে গিয়ে সুভাষকে পুত্র স্নেহে বড় করে তোলেন। বছর ১০-১১ আগে দিলীপ বোস মারা যান। তারপরেও সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল।

সংসারে অশান্তি তৈরি হয় সুভাষ তাঁর সৎ মা মণিকা দেবীর মতামতকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে নিছের ইচ্ছায় ছয় মাস আগে বর্ধমানের বড়শুলের তরুণী আল্পনাকে বিয়ে করার পর থেকে। এই বিয়ে মেনে নিতে না পেরে মণিকাদেবী কালাড়াঘাটের একই বাড়িতে আলাদা থাকছিলেন।
কাশীনাথ বাবু বলেন, সোমবার বিকালে সুভাষ তাঁকে ফোন করে জানায়, মা কেমন করছে।
এমনটা শুনেই তিনি মেয়ের বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন বাড়ির মেঝেতে মণিকা ছটফট করছে। মেয়ে মণিকার শরীরে আঘাতের দাগও দেখতে পান।

কাশীনাথবাবু জানান,শারীরিক ওই কষ্টের মধ্যেই মেয়ে মণিকা তাঁকে জানায়,মারধোরের পর তাঁর মুখে বিষ জাতীয় কিছু ঢেলে দিয়েছে ছেলে সুভাষ ও তাঁর বৌ আল্পনা। এমনটা শোনার পরেই পরিবারের লোকজন মণিকাদেবীকে দ্রুত জামালপুর ব্লক প্রাথমিক
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মণিকাদেবীকে মৃত বলে জানান।
এই ঘটনা সবিস্তার উল্লেখ করে কাশীনাথ নন্দী জামালপুর থানায় সুভাষ ও তাঁর স্ত্রী আল্পনার বিরুদ্ধে জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সুভাষ বোস ও তাঁর স্ত্রী আল্পনার বিরুদ্ধে খুনের মামালা রুজু হয়েছে।এদিন তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃত দুইজনকেই বুধবার পেশ করা হয় বর্ধমান আদালতে ।