অবতক খবর, নদীয়া: বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করা এনজিও সংখ্যা কম নয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রকাশিত “স্ফুরণ”নামক বাৎসরিক পত্রিকা অনুযায়ী নদীয়া জেলায় এ সংখ্যাও মন্দ নয়। ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অবিচল থাকা এনজিওর মধ্যে নাকাশিপাড়া নির্মল হৃদয় সমিতির ১৯৯৩ সাল থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন দের সেবা-শুশ্রূষার কাজ একদিনের জন্যও বাদ যায় নি। সংগঠনের সভাপতি পলাশ কান্তি মন্ডল, সম্পাদক মোসলেম মুন্সি ৯ সদস্যের কমিটি নিয়ে ২০০৭ সালে এনজিও হিসেবে লিপিবদ্ধ করে।

শুধু নাকাশিপাড়া নয়, আশেপাশে কৃষ্ণনগর, কল্যাণী, তেহট্ট সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সহযোগিতা করেছেন এযাবৎকাল। সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন সাংসদ তাপস পাল দোতলা বিল্ডিং বানানোর জন্য ৩২ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছিলেন। পরবর্তীতে সম্পাদক মোসলেম মুন্সী তাদের সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে, একপ্রকার হাত পেতেই সাহায্য নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন তৃতীয়তল। কিন্তু এত বড় জেলা বিভিন্ন প্রান্তের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো সংসার পরিত্যাক্ত মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর সংখ্যা কম নয় । এস ডি ও, এ ডি এম, সি ডব্লিউ সি, চাইল্ড হেল্পলাইনের মাধ্যমে উদ্ধারকৃত সকলেরই একটাই ঠিকানা নির্মল হৃদয়। তাই পূর্বের সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ, বর্তমান এই সংখ্যা  ১০৭ জন যার মধ্যে ৫০ জন শিশু-কিশোর। অন্যান্য ঘরে হলেও শিশু-কিশোরদের রাখার ব্যবস্থা ছিল একই ছাদের তলায়। প্রতিপালন ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন অসুবিধা জনিত কারণে প্রয়োজন ছিল সম্পূর্ণ আলাদা বিল্ডিং।

তাই সকল সহৃদয় মানুষের সহযোগিতা নিয়ে, এমনকি বেশ কিছু দোকানে ধার করে ৫৮ শতক জমির উপর  ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হল তিনটি ঘর, বারান্দা ও একটি পায়খানা বাথরুম। গতকাল এই নতুন ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন সংসদ মহুয়া মৈত্র। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডিএলএস,এ সম্পাদক মানিকলাল জানা, ভিডিও কল্যাণ বিশ্বাস, সি ডব্লিউ সি সদস্য এমডি সামালউদ্দিন, আনন্দ দাস সহ বিশিষ্টজনেরা। সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেম মুন্সি জানান “বাচ্চাদের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ পেলেও, বড়দের সমস্ত খরচ জোগাড় করতে হয় সাধারণ মানুষের সহযোগিতায়, এতদিন অসুবিধা হতো না, ভালো কাজে প্রচার এর সাথে অনেক অজানা মানুষে সন্ধান পাচ্ছে, আবাসিকের, ফলে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে সংখ্যা। কিন্তু খরচের সরকারি সহযোগিতা পেলে, কোন অসুবিধাই নয়।” সভাপতি পলাশ কান্তি মন্ডল জানান, পুঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও, সংসারে অবহেলিত মানসিক ভারসাম্যহীন দের দৃষ্টান্ত কম নয়, যেটা ভয়ানকভাবে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা ও আইনি পদক্ষেপ বিশেষ জরুরী।”