মাতৃদিবস / তমাল সাহা

পিপিই পরে মেয়েরাই মায়ের মৃতদেহ তুলল অ্যাম্বুলেন্সে– মাতৃদিবসে।
ঘটনা হাবরা, কুমড়া পঞ্চায়েত গ্রাম

মাতৃদিবস
তমাল সাহা

ম-নিয়ে লিখি তবে আজ। মা-মেয়ে-মৃত্যু
তিনটি ম নিয়ে আমার কারুকাজ।

রবিবার, মাতৃদিবস—
করোনায় চলে গেলো মা।
দুই মেয়ে কি করে আর দিশেহারা!
কোথায় যাবে তারা?

পঞ্চায়েতে প্রশাসনে দৌড়ে মরে
করোনা! করোনা! ছুঁয়োনা, ছুঁয়োনা।
বারো ঘন্টা রইলো পড়ে বাড়ির চত্বরে।
আত্মা কি আর অপেক্ষা করে!
ওখানেও পড়ে গিয়েছে লাইন।
সে ততক্ষণে চলে গিয়েছে যমের দুয়ারে।

ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে মন্ত্রীর হাবরায়
মন্ত্রী বলে কথা! শপথ তো তার মানবসেবায়!

ঘটনার পিছনে না সামনে কি বলবো জানি না
আরো আছে ঘটনা।
প্রশাসনের কাজ সারা, পাঠিয়ে দিয়েছে দুটি পিপিই তারা।
এবার দুই বোন হাতড়ে বেড়ায় হদিস।
মা তো এখন মড়া!
মা মরলে দেখ কী মজা লাগে! দুই বোন আকাশের দিকে তাকায়
বোঝে ঈশ্বর কী জিনিস!

ছুঁয়োনা! ছুঁয়োনা! করোনা। আমাদের মাকে করেছে করুণা।
দুই বোন নিজেরাই পরে নিল পিপিই
মৃতদেহ টেনে তুলল এম্বুলেন্সে।
দূরে দাঁড়িয়ে একশ বছরের সত্যজিৎ রায়
জুম করে দৃশ্যটি তুলে নিল ক্যামেরার লেন্সে।

ঘটনাটি কি ঘটনাকে ছাড়ে! সরকারতো খুবই নরম— মা-মাটি-মানুষের দোরে।

এবার সরকারি অ্যাম্বুলেন্স হাঁকে তিন হাজার টাকা।
দু বোনের হাতে মাত্র এক হাজার!
এক হাজারে হয় নাকি কিছু এই বাজারে?
চালক বলে, এতো আমার নয় ডোমের খরচ।
মা যাবে স্বর্গে, দেখছি তোমাদের নেই কোনো গরজ!

লালন বলে,
আমি মানুষের কাছে ঋণী। কত কিছু এই মানব বসতের শিখিনি।
করোনার দাহকার্যে খরচ লাগে কিনা,
এই গান গেয়ে যেতে পারিনি।