অবতক খবর,২৯ মার্চ: প্রায় কয়েক দিন ধরে অভিযোগ করছিলেন এলাকার গ্রামবাসীরা, দীর্ঘদিনের রাস্তা প্রায় ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, মাটি মাফিয়াদের ট্রাকের রমরমা রেষারেষি দৌলতপুরে। তাতে রাস্তার খুবই খারাপ অবস্থা। কয়েকদিন আগে একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে রাতারাতি হাসপাতালে নিয়ে যেতে গেলে, জরুরী পরিষেবা জন্য গাড়ি নিয়ে গেলে রোগী নিয়ে যেতে হসপিটালে নাভিশ্বাস হতে হয় রোগীর পরিবারকে। কারণ রাস্তার অবস্থা শোচনীয়।

মূলত কারণ হচ্ছে নগরউখড়া থেকে হাপানিয়া গ্রামে রমরমিয়ে চলছে মাটি মাফিয়াদের জমিয়ে মাটি ব্যবসা। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার বিঘে বিঘে চাষের জমি, ফলের বাগান ইত্যাদি। যার ফলে প্রশাসনের উপরে আর আস্থা রাখতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। তাই এবার সরব হলেন নগরউখড়া ২ অঞ্চলের প্রধান নারায়ণ দাস। তিনি আজ গ্রামবাসীদের নিয়ে নিজেই আটকে দেন মাটি বোঝাই করা ডাম্পার। সাথে সাথে মাটি কাটার জেসিপি মেশিন।

যদিও এলাকায় বহুক্ষণ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় থানার প্রশাসন ছুটে আসে। যদিও অবশেষে পঞ্চায়েত প্রধান তথা নারায়ণ দাসের নেতৃত্বে একদিকে যেমন আটক করা হয় ১০ থেকে কুড়িটি ডাম্পার গাড়ি, মাটি কাটার জেসিবি মেশিন, ঠিক তেমনি চাবি নিয়ে নেয়া হয়।

গ্রামবাসীদের দাবি, দীর্ঘ এক বছর ধরে এই ভাবে রাতের পর রাত মাটি কেটে মাটি মাফিয়ারা এলাকা দিয়ে নিয়ে যায়। যার ফলে এলাকার রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে একাধিক যাতায়াতের সুব্যবস্থা করা কেন্দ্রগুলি আজ পুরোটাই ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। এর দায় কে নেবে? তাই এইসব বিষয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফ থেকে কোনো রকম আশ্বাস না পেলে গ্রামবাসীরা অবশেষে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে কয়েকদিন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ থাকলেও আবারো কোন না কোন ভাবে চালানো হয় মাটির গাড়ি। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সাধারণ মানুষ।

তাই এবার সরব পঞ্চায়েত প্রধান। নিজে তিনি জানান, আমার অঞ্চলের অধীনস্থ হাপানিয়া গ্রামে চারটি নতুন রাস্তা এবং দুটি পাকা রাস্তা করা হয়েছিল। যেভাবে রাতভর গাড়ি চলে, মাটি লোড করে তাতে যেমন ড্রেন ভেঙে গেছে, ঠিক তেমনি দুটি রাস্তার যোগাযোগ কেন্দ্র সেটিরও অবস্থা খুব শোচনীয়।

এর দায় কে নেবে?শুধু তাই নয়, তিনি এটাও বলেন, যেভাবে চাষের জমি দখল করে অন্যায় ভাবে রাতের অন্ধকারে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে কিছু অংশের একটা বড় মাপের মাথা এর পিছনে মদদ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, আজ এই বিক্ষোভ করার ফলে হাবরা ও নগরউখড়ার যোগাযোগ কেন্দ্র প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ হয়ে পড়ে। যার ফলে বিভিন্ন সময়ে মাটি মাফিয়াদের গাড়ি আটকে দেওয়ার ক্ষেত্রে অঞ্চলের প্রধান প্রাণনাশের হুমকি আসে। অবরোধ করার মধ্য দিয়ে যদিও সবকিছু জেনে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনকে। যদিও তারা আশ্বাস দিলে অবশেষে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ তুলে নেয়। পাশাপাশি গ্রামবাসীরা এটাও বলে যে, আগামী দিনে যদি অন্যায় ভাবে চাষের জমি দখল করে মাটি কাটা হয়, আগামী দিনে তারা বৃহত্তর থেকে বৃহত্তর আন্দোলন করবে।

এই প্রসঙ্গে হরিণঘাটা ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন,অনেক অভিযোগ এসেছে। সমস্ত বিষয়গুলি তদন্ত করে দেখতে হবে। শুধু তাই নয়,কারও বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ আসে তাতে অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয় তাহলে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা আইন অনুযায়ী নেওয়া হবে।

এই মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য রুখতে নগরউখড়া ২ পঞ্চায়েত প্রধান নারায়ণ দাস নিজেই রাস্তার মাঝখানে বেঞ্চ পেটে অবরোধে বসে পড়েন। যার জেরে স্থানীয় কিছু মাটি মাফিয়ারা তাঁর প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয়।