মকর সংক্রান্তির রাতে হিমেল শীতে কত কি ঘটে। জীবনের অনুষঙ্গ সব দেখি আর লিখে রাখি–

মকর সংক্রান্তির রাতে
তমাল সাহা

দিনের কবিতা লিখতে পারিনা বলে
রাত ঘন হলে চোখ রাখি জানালায়।
কে কাকে দেখে জানিনা
আকাশের বুকে আগুন জমা রেখে নক্ষত্রেরা বেহায়ার মতো আমার দিকে তাকায়।

আমার হাতে কালি ফুরিয়ে আসা ডট পেন
কাগজের পাতায় ঘষে ঘষে লিখি।
পাশের নিম গাছটিতে ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে উড়ে এসে বসে হুতুম পাখি।
কদাকার মুখটি তার যদিও আমার মতো
বোধ করি তাই
আমার দিকে তাকায় ভয়ংকর নিশাচর অবিরত।

দিনের কবিতা লিখতে পারি না বলে
ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ি।
সন্ধ্যায় গাঙ্গেয় আরতি দেখেছি
শুনশান এই রাতে শীৎকারের শব্দ শুনি ফুটপাতে
ছেঁড়া কম্বলের নিচে কাতর রতিতে মেতেছে দুই ভিখারি।

দিনের কবিতা লিখতে পারি না
তবু কেন লিখে চলি হাজার হাজার ছত্র?
রামপ্রসাদ ঘাটে গিয়ে দেখি খিচুড়ির দাগ লাগা কাগজের প্লেট ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে সর্বত্র।
ঘাটের সিঁড়িতে কম্বল মুড়ে শুয়ে আছে হাঁটু মুড়ে শরীর
কুয়াশায় ঢেকেছে চাঁদ
মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান শেষে কারা বিলি করে গেছে শীতবস্ত্র।

দিনের কবিতা লিখতে পারিনা বলে
রাত্রির জাহাজে উঠে পড়ি ব্যর্থ‌ নাবিক আমি
লিখে চলি রাতের দৃশ্যাবলী
আশা রাখি প্রজন্ম আমার একদিন লিখবেই দিনের সূর্যলিপি।