‘আমার দুর্গা’

ভারত কন্যা / তমাল সাহা

উত্তর-পূর্ব গোলার্ধের এই দেশ

কর্কটক্রান্তি রেখার নিচে দাঁড়িয়ে আছি।

মাথার উপর সূর্যের উজ্জ্বল প্রতিভাস,

তার তলায় ঘনায়মান অন্ধকারে আমি।

সেই পাশার চাল মনে পড়ে তোমার?

ধর্ম-অধর্মের ঘুঁটি গড়িয়ে যায়—

বৃত্তের কেন্দ্রস্থলে আমি।

পরিধি বরাবর অসংখ্য সভাসদ,

সুমেরু অঞ্চলে উপবিষ্ট রাষ্ট্রপ্রধানেরা,

শুনতে পাচ্ছি দুঃশাসনের ক্রুর আস্ফালন!

কৌরব রাজসভা থেকে এখন প্রকাশ্য রাজপথে এসে দাঁড়িয়েছি আমি,

আমার বাঁদিকে রবীন্দ্রনাথের মর্মর মূর্তি

ডানদিকে স্বচ্ছ অভিযান—

গান্ধীজির অবয়বহীন চশমা শোভিত বিজ্ঞাপন,

আমার সামনে দোদুল্যমান কন্যাশ্রী প্রকল্পে উন্মুখ নারীর মুখ।

তোমরা কী চাও আমার কাছে?

বস্ত্রহরণের চেয়েও কী বেশি কিছু চাও?

এই দেখো আমার উন্মুক্ত স্তনযুগল,

দেখো আমার বক্ষ-উপত্যকা,

দেখো,দেখো আমার গভীর নাভিমুখ,

এই তো আমার জঙ্ঘা-নিতম্ব

এই দেখো আমার যোনিপ্রদেশ।

দেখো দংশিত ওষ্ঠদ্বয়,

দেখো রক্তাক্ত স্তনবৃন্ত,

বিধ্বস্ত জরায়ু থেকে রক্তস্রোত,

ছুটে চলেছে দক্ষিণ সাগরের দিকে।

বীর সন্ন্যাসী সেই প্রান্তিকে জলবিধৌত পর্বতে কঠিন তপশ্চর্যায়

প্রত্যক্ষ করেছিলেন ভারতকন্যা।

এই ছিন্নমস্তা সময়ে

নেই প্রয়োজন তপস্যার,

নেই প্রয়োজন আরাধনার,

তোমরা দেখো ভারতমাতার নবরূপ।

অকাল বোধনের এই কালরাত্রিতে,সমবেত সুধীজন! সমস্বরে উচ্চারণ করুন—

ইয়া দেবি!

সর্বভূতেশু নগ্নিকারূপেণ সংস্হিতা

নমস্ত‍্যস‍্যৈ নমোহ নমঃ

ইয়া দেবি!

সর্বভূতেশু ধর্ষিতারূপেণ সংস্হিতা

নমস্তস্যসৈ নমোহ নমঃ…

এসো আমরা মাকে প্রণাম করি।