অবতক খবর,২১ ফেব্রুয়ারি: ব্যারাকপুরের রাজনীতি কোন দিকে? বিশেষ করে শাসক দল তৃণমূলের। ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল দল কাকে প্রার্থী করবে এই নিয়ে প্রতিদিনই নতুন নতুন জল্পনা কল্পনার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর বোঝা যাবে কে প্রার্থী হবেন। এই ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রতিদিনই নতুন নতুন নাম উঠে আসছে সাংসদ পদপ্রার্থী হিসেবে। কিছুদিন আগে লোকের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছিল সোমনাথ শ্যামের নাম, তারপরে শোনা গেল সুবোধ অধিকারী,এরপর আর এক নেতা প্রিয়াঙ্গু পান্ডে এমন ভাবে প্রচার করলেন যে, সকলে ধরেই নিয়েছিলেন তিনি প্রার্থী হয়ে গেছেন।

কারণ তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে টিটাগর থেকে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত যেভাবে পোস্টার পড়েছিল তাতে সকলেই এমনটাই মনে করেছিলেন। তিনি তার জন্মদিন উপলক্ষে প্রত্যেক বিধানসভার প্রতিটি মন্দির মসজিদ, গুরুদুয়ারায় গিয়েছেন,আশীর্বাদ নিয়েছেন জনসংযোগ করেছেন,দুঃস্থ মানুষের সেবা করেছেন। ভাবা যায়! কাঁচরাপাড়া থাকে টিটাগড় পর্যন্ত প্রতিটি মোড়ে মোড়ে, ল্যাম্প পোস্টে, গাছে ঝুলছিল তাঁর জন্মদিনের পোস্টার। কিন্তু কালক্রমে সেই পোস্টারগুলিও বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

এই পোস্টার গুলি সাধারণ মানুষ বেশ ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে। কেউ নিজের টালির চালের উপর রেখে দিয়েছে, কেউ সেই পোস্টার দিয়ে ছাউনি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে,আবার কেউ কেউ দেখা গেছে ওই পোস্টারের উপর সব্জি-মাছ বিক্রি করছে, আবার কোথাও রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আসলে এই যে বড় বড় পোস্টার গুলি লাগানো হয়, সেই পোস্টারের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে সাধারণ মানুষ নিয়ে গিয়ে কোনো না কোনো কাজে লাগিয়ে দেন। একদিকে বলা যেতে পারে ভালোই হয়। পোস্টার গুলি মানুষের কাজে তো লাগে! যাক সেসব কথা।

ফের কয়েকদিন কাটতে না কাটতেই লোকমুখে নাম উঠে আসলো রাজ চক্রবর্তীর নাম। মানুষ আলোচনা করছেন যে,এই অঞ্চল থেকে রাজ চক্রবর্তীর স্ত্রী শুভশ্রী প্রার্থী হবেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ কয়েকজন। এই নিয়ে লেখালিখি করেছেন। তাদের সমর্থকরা প্রচারও শুরু করে দেন। তবে সেটিও কোথাও যেন ফিকে হয়ে গেল।

গতকাল ছিল রাজ চক্রবর্তীর জন্মদিন। এক্ষেত্রেও প্রিয়াঙ্গু পাণ্ডের মত ক্রিয়া-কলাপ লক্ষ্য করা গেল। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে চারিদিক ছেয়ে গেল রাজ চক্রবর্তীর পোস্টারে। ‘এবার ব্যারাকপুরে জনতার রাজ’ এই পোস্টার ঘিরেই এখন শুরু হয়েছে জল্পনা। নেতাকর্মীরা একে তাকে ফোন করছেন। আর জিজ্ঞাসা করছেন, তবে কি রাজ ফাইনাল? কিন্তু সদুত্তর দিতে পারেননি কেউই। এমনকি অবতক খবরও বেশ কিছু বর্ষীয়ান নেতাদের ফোন করে বিষয়টি জানতে চায়, তারাও কেউ কিছু বলতে পারেন নি। তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই বললেন,’তিনি একজন পরিচালক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সব থেকে বড় কথা হালিশহরের বাসিন্দা এবং কাঁচরাপাড়ায় পড়াশোনা করেছেন, তাই তাঁর অনুগামীরা তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এরকম পোস্টার যে কেউ দিতেই। তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতেই পারে। তবে ব্যানারে যে লেখাটি লেখা হয়েছে সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’

কিছুদিন আগেই রাজ চক্রবর্তী বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে উঠে গিয়েছিলেন যে তাঁকে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে দেখা যাচ্ছে না। দেব এবং মিমি চক্রবর্তীর পর রাজ চক্রবর্তীকে নিয়েও বিভিন্ন জল্পনা কল্পনা উস্কে গিয়েছিল। আর জল্পনা কল্পনা হবে না-ই বা কেন!

কিছুদিন আগেই তিনি কাঁচরাপাড়ায় এসেছিলেন। একাই এসেছিলেন। কাঁচরাপাড়া মুরগি পাড়ার যে বাড়িতে তিনি থাকতেন যেখানে তার ছোটবেলা কেটেছে সেখানে তিনি এসেছিলেন,অঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করেন। তিনি তাঁর স্কুলের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
যদিও তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে এখানে আসেননি।

তবে গতকালের পর এখন সাংসদ প্রার্থী হিসেবে রাজ চক্রবর্তীর নাম মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে।

অন্যদিকে বর্তমান সাংসদ অর্জুন সিং, এই সমস্ত জল্পনা কল্পনায় কান না দিয়ে একভাবে নিজের কাজ করে যাচ্ছেন। নিয়ম করে প্রতিটি বিধানসভায় যাচ্ছেন। একাধিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। অনেক সংবাদমাধ্যমে তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, বর্তমানেও আমি সাংসদ এবং আগামীতেও ৩-৪ টার্মে সাংসদ হয়ে আমি থাকবো।

দল প্রার্থী তালিকা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করলেই বোঝা যাবে কে থাকবে আর কে থাকবে না। তবে এইসব দেখে বিরোধীরা বলছে যে, এই তৃণমূল দলের তো এখন নেতার ঠিক নেই। রোজ নতুন নতুন নাম ভেসে আসছে। এ অঞ্চলের এক বিরোধী নেতা বলছেন এবার জনতার শুধুই মোদীজি। আর কেউ থাকবে না।