পুলওয়ামায় পাকিস্তানের মদতে জঙ্গিদের অতর্কিত আক্রমণে শহিদ হলেন বেয়াল্লিশজন ভারতীয় সৈনিক। যুদ্ধ কি করতে পারে শুনুন।

বীরচক্র
তমাল সাহা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই
বড় একঘেঁয়ে, ক্লান্তিকর এই স্লোগান।
জলে স্থলে অন্তরীক্ষে
দৌড়ায় প্রযুক্তি বিজ্ঞান।
গানের গলা টিপে ধরেছে মেশিন গান।

বেয়াল্লিশ জনকে ওরা গিয়েছে মেরে,
আমরা তার বদলা নেব হবে চুরাশি।
চলুন, একবার বধ‍্যভূমি ঘুরে আসি।

খুব বেশি আর কি ক্ষতি হবে!
যুদ্ধের বাজারে বাড়বে খাদ্যশস‍্যের দাম।
ঘরে বসে থাকবে শস‍্যজীবী
হাটে-বাজারে নারীদেহ হবে নিলাম।
শস‍্যক্ষেত যাবে জ্বলে, পুড়বে কারখানা
দেখো আমরা কত পটু, কত দক্ষ!
অতর্কিতে দিতে পারি হানা।
খুব কি ক্ষতি হবে?
দু-একটা গোলা পড়বে হাসপাতালে।
শিশুকে আনতে গিয়ে দেখবে মা
ঝলসানো দেহ পড়ে আছে ইস্কুলে।

সব রাষ্ট্রই ধৃতরাষ্ট্র
নয় তো বা আজন্ম শয়তান।
সীমান্ত লঙ্ঘন-বিরোধী চুক্তি
শীর্ষ বৈঠক, করমর্দন, আসবপান!

নিন্দুকেরা বলে নিজের ঘর
সামলাতে গট্ আপ যুদ্ধ।
রাষ্ট্র নিজেরাই যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলে।
বুকের বোতাম এঁটে গর্জায় রাষ্ট্র ।
সূর্যাস্তের আগে
মারা গেল আমাদের ছেলে।

যুদ্ধের ক্লিপিংস দেখিয়ে
এই দেশে ভোট হয়।
দেখো, আমাদের সেনা
দিয়েছে কত রক্ত।
নিঃশেষে প্রাণ, করেছে দান
মহান দেশভক্ত!
আমরা ক্ষমতায়,
আমাদের দলই বাঁচিয়েছে দেশ‌।
ভোট ফেলো এই বাক্সে,
সুখে থাকো বেশ।

নুন আনতে পান্তা ফুরোয়,
এই দেশে তুমি যুদ্ধ করো আর মরো।
দেশ চালিয়ে আমরা শুধু কোটি-কোটিপতি।
তোমার ছেলে ছিল দেশপ্রিয়!
শোকবার্তা পাঠাবো, বলবো
দেশের হল অপূরণীয় ক্ষতি।

যে দেশে যত মরবে বেশি,
সে দেশের বাড়বে তত মান।
সেই দেশের বুক স্ফীত, গর্বে গরীয়ান।
বলবে, দেখো আমাদের দেশে
কত দেশপ্রেমিক !
পাচ্ছে দেশিকোত্তম শহিদ সম্মান।

যুদ্ধরও নামকরণ হয়, মহাভারতেও ছিল।
এবার সম্পূর্ণ পুরোপুরি আধুনিক অস্ত্রাঘাত।
কত আগুন, ধ্বংস, মৃত্যু দেখবে তুমি!
হাতে রাখবে না হাত?