অবতক খবর,১৬ ডিসেম্বর: বীজপুর জুড়ে চোরেদের অবাধ গতিবিধি। তারা রীতিমতো বীজপুর পুলিশ প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। কম করে তিনমাস ধরে চলছে এই চুরি এবং ডাকাতি। বাড়িতে তো বটেই, প্রকাশ্যে সোনার দোকান থেকে সোনা,লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি হয়ে যাচ্ছে।‌ফলত,বীজপুরবাসী অত্যন্ত ভয়ার্ত, শঙ্কিত। বাড়ির গ্রিল কেটে, দরজা ভেঙে রীতিমতো ডাকাতীয় কায়দায় এই লুটপাট হচ্ছে।

পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তা দেখে মুখ্যমন্ত্রী নিজে সক্রিয় হয়ে ব্যারাকপুর কমিশনারেট মনোজ ভার্মাকে বলেছিলেন,মনোজ ব্যাপারটি দেখোতো। এখন প্রশ্ন, পুলিশ কমিশনারেট হিসেবে মনোজ ভার্মার তো নিজেরই দায়িত্ব ছিল তার অন্তর্গত থানাগুলির উপর নজরদারি করা, তারা কিভাবে কার্যকলাপ চালাচ্ছে, সেগুলো দেখার। দেখা গেল পরবর্তীতে তার পরদিনই চারজন বীজপুর থানা প্রশাসনের আধিকারিক বদলি হয়ে গেলেন। কিন্তু মনোজ ভার্মার কি হল? মনোজ ভার্মা তো এর দায়িত্বে ছিলেন। তার নিষ্ক্রিয়তার জন্য তাকে কোনরকম দায়ী করা হল না।

যাই হোক, ইতিমধ্যে একজন চোর ধরা পড়েছে। তার আগে আরো কয়েকজন ধরা পড়েছে। তাতে নাকি টাকাপয়সা উদ্ধার হয়েছে। এক চোরের কাছে নাকি ৭ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। সে এক লক্ষ টাকা ব্যয় করে ফেলেছে। এক লক্ষ টাকার হিসেব দিয়েছে। ওই এক লক্ষ টাকা কোথায় কি খরচ করেছে তার হিসেব পুলিশ নিয়েছে। এ তো সুসংবাদ।

কিন্তু ইতিমধ্যেই ১৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে হালিশহর ১৩ নং ওয়ার্ডে ও প্রসাদ নগরে একসঙ্গে চারটি জায়গায় চুরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাতে দু’জায়গায় ব্যর্থ হলেও বাকি দুই জায়গায় সফল হয়েছে চোরেরা। কোনোজায়গায় বাড়ির পাঁচটি তালা ভেঙে তারা বাড়ির টাকা পয়সা, সোনা গয়না তো বটেই টিভি ইত্যাদি পর্যন্ত লুটপাট করে নিয়ে চলে গেছে। এরকম আর একটি বাড়িতে ওই অঞ্চলের এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, অন্যদিকে পুলিশ কমিশনারেটের তৎপরতায় চোর ধরা পড়লেও, দেখা যাচ্ছে চোরেদের সাহস বেড়েই চলেছে। চুরির কার্যক্রম তারা চালিয়েই যাচ্ছে। তাহলে প্রশাসন এত নিষ্ক্রিয় কেন?

থানা প্রশাসনের ডাকবাবু তো জানেন কোথা থেকে কি তোলা পাওয়া যাবে, কারা অবৈধ কারবারের সঙ্গে যুক্ত, সেটা তিনি শনাক্ত করে তুলে আনতে পারেন, আর কোথায় কোথায় চোর-ডাকাতরা রয়েছে সেটা পুলিশ জানে না! তাহলে পুলিশ দপ্তর রাখার গুরুত্ব কি? গোয়েন্দা দপ্তর থাকার গুরুত্ব কি? এই প্রশ্ন জনবাসীর মধ্যে এসেছে। কারণ কার বাড়িতে কবে কখন চুরি হবে, কেউ জানেনা। সকলেই ভয়ে আছে।

করোনাকালীন সময়কাল। অর্থনৈতিক সুরাহা নেই। ওইসব ভান্ডারের দ্বারা মানুষ উৎসাহিত হলেও সংসার নির্বাহের পক্ষে তা অত্যন্ত কষ্টকর। ফলত চুরির দৌরাত্ম্য বাড়ছে,আর অন্যদিকে পুলিশ উদাসীন অবস্থায় বসে রয়েছে। যদি এলাকাভিত্তিক পুলিশ প্রচার এবং টহলদারি ব্যাপকভাবে চলে সেইমত ব্যবস্থা নেয় আর এইদিকে শাসক দলের রাজনৈতিক কর্মী এবং ক্লাবেরা নাকি সক্রিয় তাহলে এলাকায় চুরি হয় কি করে,এই প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ জনগণ।