অবতক খবর,২৫ আগস্টঃ অদ্ভুত এক পরিস্থিতি চলছে কাঁচরাপাড়া শহরে। ‌মনে হচ্ছে এই শহরকে কালিমালিপ্ত করতে রীতিমতো একটা চক্রান্ত চলছে। ‌ রমরমিয়ে চলছে এই শহরে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। যার জেরে চোখে বালির প্রলেপ পড়েছে জনসাধারণের। কিন্তু তবুও যখন তারা চোখ খুলছেন তখন আতঙ্কে শিউরে উঠছেন যে এই বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে কোন দুর্ঘটনা ঘটবে না তো! আর যদি ঘটে তবে সেই দায় নেবে কে?

এবার আসা যাক মূল বিষয়ে। রাত ন’টা বাজলেই শহরে শুরু হয়ে যায় বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। ‌ আর তা চলতে থাকে পরের দিন সকাল সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত। ‌ কেউ বলে এলএনটি’র জন্য এই বালি যাচ্ছে। কিন্তু দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই বালি বহনকারী ডাম্পার মালিকদের কাছে কোন বৈধ কাগজপত্র থাকে না। কিছুদিন আগেই এই বালি মাফিয়ারা শহরের মূল সড়কের উপর বালি ফেলে পালিয়েছিল। শুধু তাই নয়,কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপ সংলগ্ন অঞ্চলে এই বালি বোঝাই ডাম্পারের সাথে দুর্ঘটনাও ঘটে। অনুসন্ধানে দেখা যায়,ওই বালিও পাচারের উদ্দেশ্যে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

কিন্তু এতকিছুর মধ্যে সবথেকে বড় যে খবর সেটি ধামা চাপা পড়ে যাচ্ছে। লক্ষ্মী সিনেমা থেকে কল্যাণী যাবার যে পথটি সেখানে যে দুটি ব্রিজ রয়েছে,যা যুক্ত করেছে দুই জেলাকে, সেই ব্রিজটি এখন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

কারণ ওই ব্রিজের উপর দিয়ে বড়জোর ৮ টন ভার বিশিষ্ট কোন কিছু যেতে পারবে। তার চেয়ে বেশি ভারী কোন কিছু যাতায়াত করলে সেটিতে ধস নামতে পারে। এমনকি ক্ষতি হতে পারে আশেপাশের বাড়িঘর গুলিরও।

তবে এক একটি বালি বোঝাই ডাম্পারের ওজন থাকে ১২-১৪ টন। আর সেগুলিই সারা রাত ধরে একের পর এক সেই রাস্তা দিয়ে চলে যাচ্ছে। আর এই কাজ সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে চলছে।

এত কিছু বিধি নিষেধ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ প্রশাসন এবং নগর প্রশাসন পুরোপুরি নীরব ভূমিকা পালন করছে।

ব্রিজের যা অবস্থা তাতে যেকোন সময় ধস নামতে পারে। ঘটে যেতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা। আর কবে চোখ খুলবে প্রশাসনের? স্থানীয় নেতৃত্বরাই বা কি করছেন? তাদের কাছে কি এর কোন খবর নেই? নাকি তারা কালো কাঁচ লাগানো ঠান্ডা গাড়িতে ঘুরছেন এবং তাদের চোখে বালি যাচ্ছে না সেই কারণে বিষয়টি নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই!! নাকি তাদের চোখেও বালির প্রলেপ পড়েছে?

আদেও কি এলএনটি’র জন্য এতো বালি যাচ্ছে? কারণ প্রায় প্রতিদিনই শোনা যাচ্ছে এই অঞ্চল থেকে ৩০০-৪০০ বালি বোঝাই গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে। এত বালি তবে যাচ্ছে কোথায়? আর এর তদন্তই বা কে করবে?

অন্যদিকে রাতের অন্ধকারে যেভাবে এই বালি বোঝাই গাড়িগুলো যাতায়াত করছে তাতে কম্পন হচ্ছে আশেপাশের বাড়ি গুলিতে। যার জেরে ঘুম উড়েছে মানুষের। ক্ষোভে ফুঁসছেন তারা।

তারা বলছেন,এই সমস্ত কারণে যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তবে তার সমস্ত দায় নগর প্রশাসন এবং থানা প্রশাসনের।