অবতক খবর,১০ নভেম্বরঃ বিয়ের আগে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও পরিস্থিতির চাপে বিবাহ সম্পন্ন হয় নি। তাই বিবাহ হওয়ার পরেও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া সেই সম্পর্কের জেরেই খুন হতে হল হাওড়ার আন্দুল ব্লকের আরগোড়ির বাসিন্দা বিসমিল্লাহ শা (২২) কে।

ঘটনার সূত্রপাত পাঁচ বছর আগে। হাওড়া আন্দুল আরগোরড়ি এলাকার বাসিন্দা খুশবু (২২) র সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয় পাশের বাড়ির বাসিন্দা বিসমিল্লাহ শার । যদিও ছেলে নেশাভাঙ্গ করে ও সেভাবে রোজগার নেই বলে বিসমিল্লাহর প্রেমিকা খুসবুর বিয়ে জুজুরশাহ এলাকায় এক পাত্রের সঙ্গে অন্যত্র দিয়ে দেন তাঁর বাড়ির সদস্যরা। খুসবুর বিবাহের পরে বিসমিল্লাও বিবাহ সম্পর্কে আবদ্ধ হয় ওই এলাকারই এক মেয়ের সঙ্গে। বিবাহিত সম্পর্ক থেকে তাঁর দুই সন্তান জন্ম হয়। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরেও খুসবুর স্বামী কাজের সূত্রে দূরে থাকার সুযোগ নিয়ে ফের তাঁরা দুজনে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যায়। যদিও বিবাহের পরে খুসবু দুটি সন্তানের জন্ম দেয়। সন্তানাদি থাকা সত্ত্বেও বিসমিল্লাহ দুজনেই স্ব ইচ্ছাতেই নিজেদের সম্পর্ক চালিয়ে যায়। যদিও তাঁদের প্রেমের সম্পর্কের কোথা খুসবুর পরিবারের সদস্যরা জানতেন। তাঁরা এটাও জানতে পারে খুসবু ও বিসমিল্লাহ বিবাহের পরেও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছে। এরপরই খুসবুর পরিবারের সদস্যরা নিজেদের বসত বাড়ি অন্য ব্যক্তিকে ভাড়াতে দিয়ে মাশিলা এলাকাতে চলে যায়। শুধু খুসবুর ভাই একটা ঘরে ওই বাড়িতে থাকতো বলেই পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে।

বিসমিল্লার পরিবারের অভিযোগ পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক তাঁদের ছেলেকে বুধবার রাত্রে মাথায় ইঁটের আঘাতে থেঁতলে দেয় খুসবুর পরিবার। সাঁকরাইল থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে মৃত বিসমিল্লার পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় খুসবুর পিতা সাবির লস্কর, ভাই ফরিজুল লস্কর ও ওই এলাকার বাসিন্দা নজরুল মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের কড়া হয়েছে। যদিও মৃতের পরিবারের অভিযোগ এঁরা ছাড়াও খুসবুর মা ফরিদা বেগমও এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আর কারা এই ঘটনায় যুক্ত আছে তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে।

মৃতের জামাইবাবু শেখ সেলিম অভিযোগ করেন লস্কর পরিবার পরিকল্পনা করেই এই হত্যা কাণ্ড সংঘটিত করেছে। আর এই ঘটনা ঘটার আগে তাঁরা খুসবুকে স্বশুরবাড়ি থেকে রাজগীরে ঘুরতে পাঠিয়ে দেয়। ওরা আইন নিজের হাতে তুলেছে তবে তা সত্ত্বেও ছেলের বাড়ি থেকে তাঁদেরকে মারধর কড়া বা আইন ভাঙার কাজ করেন নি বলেই দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি দাবি জানান বিসমিল্লার হত্যাকান্ডে যুক্ত সকলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চান তাঁরা।

গোটা ঘটনার সম্পূর্ণ তথ্য ও যুক্ত ব্যক্তিদের নাম উদ্ঘাটনার জন্য গ্রেফতার হওয়া দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। আদালতে ধৃতদের পেশ করে পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানাবে বলেই সূত্রের খবর।

যদিও খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া নজরুল মোল্লার স্ত্রী টুকটুকি মোল্লা জানান বুধবার রাত্রি ১০:৩০ টা নাগাদ তাঁর স্বামী বাজার থেকে সব্জী আনছি বলে বের হয়। তারপর থেকে আর ফেরে নি। সে এক ঘটনায় যুক্ত থেকে দোষ করে থাকলে সে তাঁর শাস্তি পাবে। পাশাপাশি তিনি জানান মৃতের সঙ্গে তাঁর স্বামীর হরিহর আত্মার সম্পর্ক ছিলো। তাই তাঁকে দিয়েই মৃত বিসমিল্লাকে ডাকার পরিকল্পনা করেছিল লস্কর পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পর তাঁর স্বামী গ্রেফতার রয়েছে। সে থানাতে কি ভাবে রয়েছে তা জানা নেই তাঁর।