অবতক খবর, বারাকপুর: পৌর নির্বাচন হচ্ছে না বারাকপুর লোকসভা অন্তর্ভুক্ত পৌরসভাগুলিতে। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে,  8 টি পৌরসভা ও কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে বারাকপুর কর্পোরেশন গঠন করার পরিকল্পনা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য সরকার চিঠি দিয়ে তাদের সম্পত্তি আয় ব্যয়, লাইবেলিটি ও কর্মী সমেত সমস্ত তথ্য জানাতে নির্দেশ জারি করেছিল। ইতিমধ্যে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়ে গিয়েছে,  এই পদক্ষেপ গ্রহণ পরেও রাজ্য পৌর নির্বাচনের জন্য ওয়ার্ড ভিত্তিক সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তাতে এই আটটি পৌরসভাগুলির নাম রয়েছে এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, যে সম্ভবত এই পৌরসভা গুলিতেও নির্বাচন হতে চলেছে।  কিন্তু যে খবর পাওয়া গিয়েছে,  সেই খবর অনুযায়ী কাঁচরাপাড়া থেকে পানিহাটি পর্যন্ত সবকটি পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত রেখে একেবারে ব্যারাকপুর কর্পোরেশন গঠনের পর নির্বাচনে যেতে চায় সরকার।

তবে প্রশ্ন কেন এমন সিদ্ধান্ত এর অনেক গুলি ব্যাখ্যা উঠে এসেছে। সরকারি ব্যাখ্যা অনুযায়ী কলকাতা কর্পোরেশনের সঙ্গে লাগোয়া এই পৌরসভা গুলিকে কর্পোরেশন তৈরি করে সরকার আরো বেশি উন্নয়ন করার লক্ষ্যে কাজ করবে। তাছাড়া কর্পোরেশন হলে এই অঞ্চলের মানুষের পরিষেবা আরো বেশি উন্নত স্থলে পাবেন। তাছাড়া সরকার এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আলাদা করে উন্নয়ন তহবিল তৈরি করে কলকাতার মতন কাঁচরাপাড়া থেকে পানিহাটি পর্যন্ত সমস্ত পৌরসভা অঞ্চলগুলোকে ডেভলপ করতে চাইছে।

তবে এর অন্য ব্যাখ্যাও রয়েছে। বলা হচ্ছে যে বারাকপুর লোকসভা এলাকা তৃণমূল চেষ্টা করেও জয়লাভ করতে পারেনি। পৌরসভাগুলি এক ঝটকায় সরকারে হাত থেকে বেরিয়ে বিজেপির দখলে চলে গিয়েছিল।  তাই তৃণমূল এই সমগ্র পৌরসভাগুলি নির্বাচন আটকে দিয়ে কিছুটা সময় হাতে পেতে চায় যাতে মানুষের মধ্যে প্রচার চালিয়ে বিজেপির দিক থেকে ধরলে পড়া মানুষকে পুনরায় তৃণমূলের দিকে ফিরিয়ে আনা যায়।

এছাড়াও বারাকপুর  সংসদীয় এলাকায় তৃণমূল এখন বেকায়দায় রয়েছে। যদিও ছয় মাসের মধ্যে দখল হয়ে যাওয়া সবকটি পৌরসভা তৃণমূল পুনরায় উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও মানুষের মন এখনো কিন্তু তারা উদ্ধার করতে পারেনি। তৃণমূলের জেলা নেতারা মনে করছেন স্বয়ং পার্থ ভৌমিক জেনে বারাকপুর  অঞ্চলের তৃণমূল সবচেয়ে বলিষ্ঠ নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন তিনি এই মুহূর্তে পৌর নির্বাচন করার পক্ষে নন।

গ্রাউন্ড জিরো রিপোর্ট বলছে যে তৃণমূল কাউন্সিলরদের বিজেপি থেকে পুনরায় নিজের দলে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে দল।  কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে মানুষ যেভাবে তৃণমূলকে এলাকায় এলাকায় প্রত্যাখ্যান করেছে তা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে এখনো হয়নি, আরো কিছু সময় লাগবে দিদিকে বল কর্মসূচি ও কাজ কিছুটা মানুষের মন ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। কিন্তু তৃণমূল কাউন্সিলরদের দুর্নীতি যেভাবে রন্ধে রন্ধে ছড়িয়ে পড়েছে তার থেকে তৃণমূল এখন বেরিয়ে আসতে পারেনি। শুধু তাই নয় এখনো তৃণমূল নেতা কাউন্সিলর নিজের নিজের এলাকায় মানুষের মন জয় করতে পারেননি। এছাড়া এলাকায় এলাকায় বেআইনি পথে টাকা উপার্জনের যেভাবে তৃণমূল নেতা কাউন্সিলর রয়েছেন তারা সাধারণ মানুষের কথা ভাবতেও পারছেন না যদিও কিছু কিছু নেতা কাউন্সিলর তার আগের রাজনৈতিক জীবনকে পাল্টাতে শুরু করেছেন কিন্তু বেআইনি পথে টাকা উপার্জনের পথ বেশির ভাগ নেতাই ছাড়তে পারছেন না।

শুধু তাই নয় এলাকায় এলাকায় তৃণমূল নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে এক অপরের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিজের দখলে নেওয়ার জন্য তৃণমূল নেতা কাউন্সিলর সবসময় ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত থাকছেন জর্জরিত হয়ে গেছে উপর কিছু বোঝা যাচ্ছে না কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি খুবই খারাপ।

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে সুবোধ অধিকারীর মতন একজন কে বিজেপি থেকে এনে মাঠে নামিয়ে তৃণমূল এলাকা উদ্ধার করতে পেরেছে ক্লাব ও পার্টি অফিস উদ্ধার করতে পেরেছে কিন্তু সাধারণ ভোটারদের মন পুরোপুরি উদ্ধার করতে এখনো পারিনি তাই এমন অবস্থায় ভোট হলে আটটি পৌরসভার মধ্যে ২-৩ টি পাওয়াও অনেক চাপ হয়ে যাবে।

তাই এই সমস্ত কিছু বিচার করে এই মুহূর্তে ব্যারাকপুর করপোরেশন তৈরি করে বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোটে যাওয়া তৃণমূলের পক্ষে ভালো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা তাই এই অঞ্চলের এখনই ভোট হচ্ছে না একেবারে পরিষ্কার।