বাটি কি ভাবে কবিতা ,না পদ্য,না গদ্য,না প্রবন্ধ হয়ে যায় দেখুন। আমার মতো অক্ষরজীবী একবার চেষ্টা করছে তা লেখার…

বাটি
তমাল সাহা

করোনা এসেছে পৃথিবীতে।
ভয়ংকর মহামারী,
ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক, ভয়–
রীতিমতো লাল চক্ষুর সন্ত্রাস।

লকডাউন চলছে, ব্যতিব্যস্ত রাষ্ট্র।
প্রতিষেধক -নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কার
কে কত আগে করতে পারে
চলছে রীতিমতো তার প্রতিযোগিতা।

পৃথিবীতে এমন সুস্থ প্রতিযোগিতা সুসভ্যতার চিহ্ন এঁকে দিয়ে যাচ্ছে।

টুকুন বলে, বাবা! কত লক্ষ কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে করোনা?
করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারের এত ব্যস্ততা দেখি দুনিয়ায়!
তারপর কিছুক্ষণ চুপ। এবার বলে,
কত লক্ষ মানুষ মরে না খেতে পেয়ে, অপুষ্টিতে প্রতিদিন?
খিদে দূরীকরণের ওষুধ কোথায়?

অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়কেরা
অনেক কথা তো লিখে যায়।
তারা কি জানে না
খিদের প্রতিষেধক কোথায় পাওয়া যায়?
ওষুধের কথা তো রাষ্ট্র ও গবেষকরা সকলেই জানে।
তিয়াত্তর বছর স্বাধীন দেশ
মানুষ শুধু ভিক্ষে চায়!

ভাত নিয়ে তো কত কবিতা লেখে কবিরা,
সে তো তুমিও জানো।
বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তো ভাতের কবি বলে
শিরোপাই পেয়ে গেছে আমাদের কাছে।

টুকুন বলে,
কাগজে পড়ছি, দেখছি মিডিয়ায়
লকডাউন চলছে।
করোনা নিয়ম ভাঙতে দুর্বার কারা?
পুলিশ দেখো কেমন লাঠিচার্জ করছে!
পেট আর পুলিশের পেটাই– চলছে লড়াই
দেখো কে জেতে!

ঐ দেখো
রাস্তায় হাজার হাজার মানুষের ভিড়!
ভিক্ষের ত্রাণ-দয়ার দান নেবার জন্য
খড়ির গন্ডি শিকেয় উঠেছে।
কেউ মানছে না গণ্ডি,ঐ চাকা চাকা গোল গোল দাগ।
দীর্ঘ হাত ক্রমাগত বাড়িয়ে যাচ্ছে বাটি
কত তাড়াতাড়ি পাবে ভাত!

তাহলে মানুষ কাকে পাচ্ছে ভয়?
করোনাকে সহজেই পদদলিত করেছে মানুষ,করে ফেলেছে তাকে জয়।
বাটি হাতে মানুষগুলো পাচ্ছে
শুধু খিদেকে ভয়।

চারিদিকে দেখো
হাতে হাতে কত বাটি ঘোরে।
পৃথিবী কি সূর্যকে এর চেয়েও জোরে প্রদক্ষিণ করে?