অবতক খবর,৬ নভেম্বর,রুপম রায়,ঝাড়খণ্ড: ঝাড়খন্ডের পাকুড়ে প্রতি বছরই ধুমধাম করে কালীপুজো হয় । এবছরে রাজবাড়ির কালিপূজা ৪০০বছরে পদার্পণ করে । পুরানো দিনের ইতিহাস থেকে জানা যায় রাজবাড়িতে কালীপুজোর প্রচলন ছিল ।

রাজা কুমার কালিদাস প্রজাদের মঙ্গলের জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি স্থাপন করলেন ।এই সময়ে পাহাড়ের উপরে কালি পূজার প্রচলন ছিল । পাহাড়ের উপরে মুলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস । এদের কালিমাতা ছিল খুব জাগ্রত । প্রতিবছর কালীপুজোর সময় বলির রেওয়াজ ছিল । তবে এদের মায়ের পূজায় কোলের পুএ সন্তান কে বলি দেওয়া হতো । প্রচুর পরিমাণে শিশুর বলিতে আদিবাসী পরিবারে সন্তান হারা হয়ে পড়ে । তখন আদিবাসী পরিবারের লোকজন রাজার দ্বারস্থ হলেন ।রাজা মর্মান্তিক ঘটনার কাহিনী শুনে মা কালীর কাছে নির্জলা উপবাস থেকে প্রার্থনা শুরু করলেন ।

মাকালি সন্তুষ্ট হয়ে রাজাকে নির্দেশ দেন পাহাড় থেকে পূজা নামিয়ে রাজার স্থানে প্রতিষ্ঠা করতে । কিন্তু রাজা মা কালীর দাবি মেনে নিলেও , শিশু বলি মেনে নিতে পারেননি ।তখন মা কালী বলেন সাতটি শিশুর মাথা দিয়ে আমার বেশি প্রতিষ্ঠা করবি ।আর শিশুর পরিবর্তে চালু হয় পাঠা বলি ।নিয়ম মেনে আজো রাজবাড়ীতে প্রতিমা তৈরি হয় । পূজার দিন রাজপরিবারের সদস্যরা গহনা, মুকুট পরিয়ে দেন ।মা কালীর মুর্তি সাজানোর পর ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘাড়ে করে মাকলিকে নিয়ে যাওয়া হয় থানে ।

মাকে বসিয়ে পূজা শুরু হয় তান্ত্রিক মতে । বীরভূমের তান্ত্রিকরা প্রতিবছর পূজা করতে আসেন । এখানকার মা শ্মশান কালী নামে পরিচিত ।আজো প্রথামেনে প্রথম পাঁঠা বলি হয় রাজ বাড়ীর নিত্য কালি মায়ের । তারপর শুরু হয় শ্মশান কালীর পাঁঠা বলি । সমস্ত পাঁঠা বলি দেওয়া শেষ হবার পর বালকেশ্বরী কালী মন্দিরে পাঁঠা বলি দেওয়া হয় ।

সর্বশেষ রাজবাড়ীতে নিত্য কালি মায়ের মন্দিরে পাঁঠা বলি হয় ।বলি শেষ হতেই মহিলারা তেল সিন্দুর দিয়ে সমস্ত জায়গার কালী মন্দিরে গিয়ে মাকে ঠান্ডা করেন । এবছর শ্মশান কালী মন্দিরে ৬২৫ টা পাঁঠা বলি দেওয়া হয়েছে ।আজোও প্রথা মেনে সন্ধ্যার আগেই মাকালীকে বরন করে ঘাড়ে চাপিয়ে শ্মশান কালী কে রাজবাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হয় ।

তারপর সেখান থেকে বাজার ঘুড়িয়ে এক পুকুরে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে রাজবাড়ির সদস্যরা মায়ের গহনা মুকুট খুলে নেয় । তারপর শ্মশান কালী কে বিসর্জিত করা হয় । এখানকার মা শ্মশান কালী পুকুরে বিসর্জিত হবার পর ঐ পুকুর সেজে ওঠে ছটপূজার জন্য ।