অবতক খবর,১৯ জানুয়ারি: বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গিয়েছিল ওঁদের গত বছর অগাস্টেই। তখন কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গ (Covid 2nd Wave) অনেকটাই কমে এসেছে। আবার সুস্থতার আশায় বুক বাঁধছিল দেশ। ওঁরাও আশা করেছিলেন ২০২২ এর ২৪ জানুয়ারিতে ধুমধাম করেই বিয়ের অনুষ্ঠান হবে। পাত্র-পাত্রী সন্দীপন সরকার, অদিতি দাস। দুজনেই বর্ধমানের বাসিন্দা। মাঘে বিয়ের দিন স্থির। কিন্তু তার আগেই পাত্রের কোভিড (Covid 19)। শুধু তাই নয়, পাত্রকে ভর্তি হয়ে হয় হাসপাতালেও ! এরপরই আসে সরকারি গাইডলাইন উত্তুঙ্গ করোনা পরিস্থিতিতে । ৫০ জনের বেশি অতিথি নিমন্ত্রিত থাকতে পারবে না বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে। তখনই মাথায় প্রায় বাজ ভেঙে পড়ে অভিভাবকদের। কী হবে, কাকে ছেড়ে কাকে বাদ দেবেন তাঁরা। এতে তো সমস্যা বাড়বে। এদিকে সন্দীপন – অদিতির বিয়েতে যোগ দিতে আগ্রহী অনেকেই। কী করা যায় ?

হবু কনে অদিতি জানালেন, হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি খেলল পাত্রেরই। কোভিড পরিস্থিতিতে সবই যখন অনলাইনেই হচ্ছে, তাহলে বিয়ের অনুষ্ঠানই বা নয় কেন? হেসে অদিতি বলেন, সে আবার হয় নাকি ! অভিভাবকদের মন মানতে চাইছিল না। কিন্তু সকলকে বোঝান সন্দীপনই। প্রথমে ফেসবুকে পোস্ট করে পুরো পরিকল্পনাটা পোস্ট করেন পাত্র নিজেই। তিনি চান, বিয়ের অনুষ্ঠানে দুই পরিবার মিলিয়ে ১০০ জন হাজির থাকুন, আর বাকিরাও সঙ্গে থাকুন। বিয়েরআসরে থাকুন, আশীর্বাদ জানান ভার্চুয়াল মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, নিমন্ত্রিতদের ভূরিভোজের আয়োজনও  করা হচ্ছে আর সেটা হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। এই পরিকল্পনা দেখে আগ্রহ প্রকাশ করে জোম্যাটো ফুড ডেলিভারি সংস্থা Zomato)। কোভিড কালে এমন একটা উদ্যোগের অংশ হতে চেয়ে যোগাযোগ করেন তাঁরা। জানালেন সন্দীপন সরকার।

অদিতি জানালেন, শুধু কী তাই, আমাদের এই পরিকল্পনার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় পড়ে বিয়েতে ভার্চুয়ালি হাজির থাকতে চাইছেন বহু মানুষই। তাই এক্কেবারে আমন্ত্রিত আত্মীয়দের জন্য একটি লিঙ্ক ক্রিয়েট হবে। আরেকটি গুগল মিট লিঙ্ক (Google Meet) থাকবে আগ্রহী অন্য ব্যক্তিদের জন্য  ! আর আমন্ত্রিতরা ভারতের যে যেখানে আছেন, তাঁদের কাছে একই ফুড প্যাকেট সুন্দর ভাবে পৌঁছে দেবে জোম্যাটো, এমনই পরিকল্পনা।

বর্ধমানের পাল্লা রোডের বাসিন্ডা সন্দীপন সরকার পেশায় ব্যবসায়ী। হবু স্ত্রী অদিতি দাসও বর্ধমানের শাঁখারি রোডে থাকেন। তিনি কলকাতায় বেসরকারি সংস্থার প্রাক্তন কর্মী। দুজনের এই ভাবনা আপাতত সাড়া ফেলে দিয়েছে বর্ধমানে আর নেট দুনিয়ায়। সকলেই চাইছেন, ২৪ জানুয়ারি একবার অনলাইনে বিয়ের আসরে হাজির থাকতে।