আবতক খবর নিউজ ব্যুরো ঃঃ ১৯শে,নভেম্বর ঃঃ নিউদিল্লি ঃঃ প্রত্যাশিতভাবেই কাশ্মীর প্রসঙ্গে উত্তাল হলো লোকসভা। দাবি উঠল ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাকে সংসদে হাজির করানোর। এই দাবির মুখে অসহায় হয়ে রইলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা|

গত আগস্ট মাসের ৫ তারিখে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার খর্ব করার পাশাপাশি রাজ্যকে দ্বিখণ্ডিত করা হয়। সেই দিনই গৃহবন্দী করা হয় রাজ্যের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, তাঁর পুত্র ওমর আবদুল্লা ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিসহ রাজ্যের প্রথম সারির সব রাজনৈতিক নেতাকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেদিন লোকসভায় জানিয়েছিলেন, ফারুক আবদুল্লাকে বন্দী করা হয়নি। তিনি স্বেচ্ছায় নিজ গৃহে অবস্থান করছেন।

সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হওয়া মাত্র বিরোধীরা একযোগে ফারুকের উপস্থিতির দাবি জানানোর পাশাপাশি কাশ্মীর পরিস্থিতির জন্য শাসক দলের সমালোচনা শুরু করেন। স্পিকার ওম বিড়লা তখন জানান, ফারুককে গ্রেপ্তারের খবর সেই সময় তাঁর কাছে ছিল না। এখন আছে। তিনি বলেন, রীতি মেনে কাশ্মীরসহ সব প্রসঙ্গ আলোচিত হবে। কিন্তু সভার শিষ্টাচার নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।

গত রোববারই সর্বদলীয় বৈঠকে বিরোধীরা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, কাশ্মীর পরিস্থিতি, বেহাল অর্থনীতি, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব নিয়ে তাঁরা সরব হবেন। সেই ইঙ্গিত অনুযায়ী সোমবার সভার শুরু থেকেই তাঁরা স্পিকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। জাতীয় সংগীত শেষ হওয়া মাত্র তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য সৌগত রায় বলেন, ফারুক আবদুল্লা সভায় নেই। তাঁকে আনার নির্দেশ দেওয়া হোক। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় স্লোগান। বিরোধীরা সভার ওয়েলে নেমে আসেন।

পুরো প্রশ্নোত্তর পর্ব তাঁরা স্লোগান দেন। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলতে থাকেন, শাসক দল সংসদকে কোন চোখে দেখেন তার প্রমাণ রয়েছে সভাতেই। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী কেউ সভায় উপস্থিত নেই। কাশ্মীর অবরুদ্ধ আজ টানা ১০৮ দিন। সরকার দেশের সাংসদদের উপত্যকায় যেতে দিচ্ছে না। অথচ বিদেশের সাংসদদের নিয়ে গিয়ে পৃথিবীকে দেখাতে চাইছে কাশ্মীর কত স্বাভাবিক। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে সদস্যরা বলতে থাকেন, বিরোধীদের ওপর হামলা বন্ধ করো, ফারুককে মুক্তি দাও। অধীর এ কথাও বলেন, রাহুল ও সোনিয়া গান্ধীদের এসপিজি প্রহরা প্রত্যাহার করে সরকার বিরোধীদের ঝুঁকির মুখে দাঁড় করিয়েছে। অথচ এই গান্ধী পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন।

বিরোধীদের সম্মিলিত এই দাবির মুখে স্পিকার বারবার বলতে থাকেন, সভার নিয়ম মেনে যেকোনো বিষয়ে আলোচনায় তাঁরা প্রস্তুত। কিন্তু ফারুকের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে তাঁকে সভায় আনার বিষয়ে বিরোধী দাবি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, কাশ্মীর নিয়ে তাঁরা যা বলছেন তা দেশের শত্রুদের হাত শক্ত করছে।