অবতক খবর,৯ অক্টোবর: ভারতবর্ষ জুড়ে এখন একটাই হইচই মিডিয়া দালাল। চতুর্দিক থেকে রব উঠেছে মিডিয়া বিশেষ বিশেষ রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্রের পক্ষে দালালি করছে। ভারতবর্ষ বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। ‌এই গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হচ্ছে মিডিয়া। ইংরেজিতে একে গালভরা নাম দিয়ে বলা হয়,”ফোর্থ পিলার অফ ডেমোক্রেসি” বর্তমানে মিডিয়া যে চিত্র দেখাচ্ছে,এরা ডেমোক্রেসির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। ‌এরা রাষ্ট্রের প্রতিভূ বা রাজনৈতিক দলের ডেমো হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‌

বিশেষ করে দলিত মনীষা বাল্মীকির গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর রাষ্ট্রের যে ভূমিকা সে বিষয়ে এক শ্রেণীর মিডিয়া এর বাস্তব ছবি জনসাধারণের কাছে তুলে ধরেছে এবং আন্তর্জাতিক জগতে ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের স্বরূপ প্রকাশ পেয়েছে। আরেক শ্রেণীর মিডিয়া যারা রাষ্ট্রের পক্ষ নিয়ে এই বিশেষ হত্যাকাণ্ডটিকে হেয় করার জন্য অন্য দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রচার দিচ্ছেন। বর্তমানে এই যে মিডিয়া হলুদ সাংবাদিকতা এবং জনগণের পক্ষে না বলে রাষ্ট্রের পক্ষে বলা ভারতবর্ষের অনেক উল্লেখযোগ্য মিডিয়া তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছে।অন্যায়ভাবে টিআরপি বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে।

এখন মিডিয়ার নিজেদের মধ্যেই বাকযুদ্ধ, রীতিমতো বাক সংঘর্ষ তৈরি হয়ে গিয়েছে এবং বিশ্বের দরবারে তা প্রতিফলিত হচ্ছে। ‌ ভারতবর্ষের মিডিয়াগুলির চরিত্র সম্পর্কিত ধারণায় বিশ্ব হতবাক হচ্ছে। আমরা যারা সাধারণ সংবাদকর্মী, ছোট্ট মিডিয়া চালনা করি তাদের পক্ষে এটি দুঃখবাহক ঘটনা। আমরা বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেরা তদন্ত করে সাধারণ মানুষের,শ্রমজীবী মানুষের, মেহনতী মানুষের কোথায় কোথায় কি অসুবিধা, কি পরিস্থিতি সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমরা চেষ্টা করছি বাস্তব চিত্র মানুষের সামনে তুলে ধরার। অদ্ভুত ভাবে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্র এই করোনা পরিস্থিতিতে অনেক কিছুই প্রকল্প ঘোষণা করছেন সে কেবল কথা হয়েই থাকছে। পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক দলেরা আন্দোলন করছেন। ধর্ষণের বিরোধিতা করে আন্দোলন করছেন। ‌ সবই ঠিক আছে । কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার জন্য যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস চাল ডাল তেল সবজি তার মূল্য যে আকাশ ছোঁয়া সে বিষয়ে কোন লাগাতার আন্দোলন, প্রতিবাদ গড়ে উঠছে না।

বিশেষ বিশেষ মিডিয়া বিশেষ বিশেষ খবরের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন। জনসাধারণ মানসিক যে কি অবস্থায় রয়েছেন এই করোনা কালে, তার কি পরিস্থিতি তার সঠিক চিত্র তুলে ধরছেন না। ‌৩৫ টাকা কেজি আলু,পেঁয়াজ ৮০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের ডালের দর প্রায় ২০০ টাকার কাছাকাছি, সাধারণ সবজি কোনটাই ৬০-৭০ টাকার নিচে নেই। এ ব্যাপারে মিডিয়াগুলোর যে জনমত গড়ে তোলার দরকার ছিল তা তারা করছে না। রাষ্ট্রের পক্ষে তারা কাজ করে চলেছে। সুতরাং সামাজিক দায়, দায়িত্ববোধে ভারতবর্ষের মিডিয়াগুলি অনেক পিছিয়ে আছে এবং নিজেদের মধ্যেই অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে রাষ্ট্রের দালালি করছে। ‌