অবতক খবর, নদীয়াঃ  ১৮৮৭ সালের ২৬ শে জুন যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত এর জন্ম। নদীয়াজেলা শান্তিপুরে পৈত্রিক বাসভূমি , অনেকের মতে কবির জন্ম হয়েছিল বর্ধমান জেলার কানলা ২ নম্বর ব্লকে পাতিল পাড়া গ্রামে। ওই এলাকারই সিংঙেরকোন এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে কেনাবেচা দেখে তার বিখ্যাত “হাট”কবিতা। সরকারি সহযোগিতায় একটি আবক্ষ মূর্তি, গবেষণাগার স্থাপিত হয়েছে।

কিন্তু শান্তিপুর হরিপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তাঁর মূল বাড়িটি তৎকালীন সময় থেকে দেখভালের অভাবে চার পাঁচটি পরিবার বসবাস শুরু করে। 1954 সালে কবির মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠ সন্তান সুকর্ণ সেনগুপ্ত ১৯৭০ সালে । এসেছিলেন পিতার একটি স্মারক স্থাপন করার জন্য। পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে একবার দেখে যান পৈত্রিক ভিটে। তখন ওই বাড়িতে বাস করা প্রত্যেকে জানান , ভিটেমাটি বিক্রি কোন প্রশ্নই ওঠে না, আপনারা রক্ষাকর্তা হিসেবে থাকবেন এ বাড়িতেই।কবির সন্তানদের প্রত্যেকেরই মৃত্যু হওয়ার পর কোনো পৌপুত্র এখনো পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি, বা এলাকার স্থানীয় অধিবাসীরাও যোগাযোগ করতে সম্ভবপর হয়নি।

সরকারি উদাসীনতায় ভারাক্রান্ত হয়ে, কবির পরিচিত কিছু ব্যক্তিত্ব এবং শান্তিপুরের বেশ কিছু সচেতন নাগরিক মিলে গঠন করেছে স্মৃতি রক্ষা কমিটি। তারা চাইছেন ওই স্থানে সকলের একটু করে জায়গা ছেড়ে দিয়ে গঠিত হোক একটি লাইব্রেরী, কবির মূর্তি, এবং একটি সংগ্রহশালা। বৈধ কাগজপত্র না থাকলেও শুধুমাত্র দখল স্বত্ব বজায় রাখা পরিবারের মধ্যে এবং স্মৃতি রক্ষা কমিটির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিচ্ছে। তাই কমিটির পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত, এবং বিডিওর কাছে একটি আবেদন জমা দেয়া হয়েছে। যদিও অন্য বসবাসকারীদের মধ্যে থেকে ফটিক চন্দ্র ঘোষ অন্যদের তুলনায় বেশ খানিকটা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

স্মৃতি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি সুমন্ত ব্যানার্জি জানান, “প্রশাসনের তৎপরতায় ছাড়া যে কোন রকম আলোচনার আয়োজন করলে তা ব্যক্তি আক্রোশে পরিণত হচ্ছে। তাই আগামীতে সকলে বসে প্রশাসনিক সহযোগিতায় মিটবে সমস্যা বলেই আমার বিশ্বাস।”ছোটবেলায় কবির সান্নিধ্যে আসা ওই এলাকারই সত্তরোর্ধ্ব এক কবি ফকির স্বর্ণকার জানান “কবি যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তর‌ লেখা বিখ্যাত কবিতা “হাট” দূরে গ্রাম দশ বারো খানি /মাঝে একখানি হাট /সন্ধ্যায় সেথা জ্বলেনি প্রদীপ /প্রভাতে পড়ে না ঝাঁট। বিখ্যাত এই কবিতার শেষ পংক্তি আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। বর্তমান আমরা এতই কর্ম ব্যস্ত পরিবারের জন্য তার স্মৃতিচারণ করার সময় টুকু পাই না।”