অবতক খবর,৮ জানুয়ারি: হালিশহর পুকুর ভরাটে বহুদিন থেকেই সুনাম অর্জন করেছে। হালিশহরের কয়েকশো পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। সরকারি কোনো হেলদোল নেই। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পুকুর ভরাট হয়েছে। যারা ওয়ার্ড প্রতিনিধি অর্থাৎ জনপ্রতিনিধি বলে দাবি করেন, তাদের চোখের সামনেই এইসব ঘটেছে। সোজা কথায় এইসব পুকুর ভরাটের সঙ্গে তাদের হিস্যা আছে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, পৌরসভার নির্বাচন হওয়া উচিত কিনা বা পৌর প্রতিনিধি নির্বাচন করা উচিত কিনা? পৌর প্রতিনিধির কাজ তার ওয়ার্ডকে সুস্থ ও সুন্দর রাখা। তারা সেই কাজগুলি করছেন কি? যদি না করেন তাহলে এই নির্বাচন ,এই পৌর নির্বাচন ভাঁওতা। হালিশহরের পৌরপ্রধান অংশুমান রায় একসময়ে গর্ব করে বলেছিলেন, আমরা ভরাট পুকুরকে আবার তার পুনরাবস্হায় ফিরিয়ে দিয়েছি। সেই ভরাট পুকুর খনন করে মাটি উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা বলে তিনি দাবি করেছিলেন। তবে প্রশ্ন,তারা করেছেন ঠিক আছে, তারা পুকুরের যে পুনর্জন্ম দিয়েছেন অর্থাৎ মাটি যে উঠিয়ে ফেলেছেন তার জন্য যে ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে সেই ব্যয় বরাদ্দ কোত্থেকে এসেছে? সে তো জনগণের কোষাগার থেকেই এসেছে। যিনি ভরাট করেছেন তার থেকে কি সেই খরচটির নেওয়া হয়েছে? যদি না নেওয়া হয়ে থাকে তবে জনগণের টাকায় ভরাট পুকুর খনন করিয়ে পুনরাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার কোন কৃতিত্ব তিনি দাবি করতে পারেন না। বরঞ্চ এর জন্য পৌর প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিতে পারে ওয়ার্ডের অধিবাসীরা জনস্বার্থে।

যাইহোক, আবার শুরু হয়ে গেছে পুকুর ভরাট। হালিশহর ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিখ্যাত ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের প্রতিনিধি রাজা দত্ত। পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ করে যার নাম আনন্দবাজার পত্রিকার দৌলতে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ওয়ার্ডে জিপি রোডের ধারে একটি পুকুর ভরাট চলছে। ৩ নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি মৃত্যুঞ্জয় দাস তিনি মা-মাটি-মানুষের প্রতিনিধি বলে নিজেকে ঘোষণা করেন। তাঁর ওয়ার্ডে একটি পুকুর নির্বিঘ্নে ভরাট হয়ে চলেছে। শোনা যাচ্ছে,যিনি ভরাট করছেন তার সঙ্গে মৃত্যুঞ্জয় দাসের বেশ দোস্তি রয়েছে। এই সব কান্ড তো চলছেই।

কাঁচরাপাড়া ৭নম্বর ওয়ার্ডের বিষয়ে যতই সংবাদপত্র লিখুক, যতই পোর্টাল মিডিয়ারা বিরোধিতা করুক একটি পুকুর ভরাট হয়ে চলেছে। এটি শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল তা সত্ত্বেও কেউ চোখে দেখছেন না। অর্থাৎ সামনের পৌর নির্বাচনে এইসব ওয়ার্ডের প্রতিনিধিরা নিশ্চয়ই আবার মনোনয়ন পাবেন।

আর পাড়ার মানুষ বলছেন মনোনয়ন না পেলেও কোনো ক্ষতি নেই। কারণ মনোনয়নের যে আসল কারণ জনপ্রতিনিধি হয়ে কামাই করা তার প্রায় পূর্ণ শতাংশই তাদের কামাই হয়ে গিয়েছে। এখন আবার জনপ্রতিনিধি হলে আবার সুযোগ পাবেন। সুযোগ না পেলেও কোনো ক্ষতি নেই। যা কামাই করেছেন তাতে তিনি আজীবন কয়েক পুরুষ খেয়েদেয়ে সুখেই কাটিয়ে যেতে পারবেন।