পুকুর ধরো,ভরাট করো– প্রকল্প চলছে কাঁচরাপাড়া ৭নং ওয়ার্ডেঃ প্রশাসন নীরব, উদাসীন

অবতক, ১৪ জানুয়ারিঃ মনে হচ্ছে কাঁচরাপাড়া পৌরসভা অঞ্চলে নতুন প্রকল্প শুরু হয়েছে। ‌ ‘জল ধরো জল ভরো’ যে প্রকল্পটি ছিল সেটি খুব সম্ভবত পরিবর্তিত হয়ে গেছে।‌ সেই স্লোগান এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে পুকুর ধরো ভরাট করো।
কাঁচরাপাড়া ৭ নং ওয়ার্ডের কালিনগর রোডে দীর্ঘ বছর ধরে আমরা অভিযোগ জানিয়ে আসছি প্রায় ২৮ কাঠা জমির উপরে একটা বিশাল জলাশয় সেটা ক্রমাগত ভারাট হয়েই চলেছে।

এ ব্যাপারে ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্জীব সাহার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে । আমি পৌর কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। উপ পৌরপ্রধান মাখন সিনহাকেও আমি লিখিতভাবে জানিয়েছি। এ নিয়ে বছর দেড়েক আগে একটি মিটিংও হয়। যারা এই পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িত তাদের ডাকা হয়েছিল। তাদের কাছে কাগজপত্র চাওয়া হয়েছিল। তারা বলেছিলেন যে, ভাইস চেয়ারম্যান আমাদের বাড়ির সংলগ্ন থাকেন, আমরা সমস্ত কাগজপত্র জেরক্স কপি তাঁর বাড়িতে দিয়ে আসব। দীর্ঘদিন এই অবস্থায় চলছে।

পৌর প্রশাসন, থানা প্রশাসন চুপচাপ। পুকুর ভরাট হয়েই চলেছে। ওই অঞ্চলের নাগরিকরা রীতিমতো অপমানিত বোধ করছেন। কারণ তারা বলছেন, এই পুকুরটির বিষয়ে আমরা বারবার আবেদন করেছি পৌরসভার কাছে। যদি এই পুকুরটি ভরাট হয়ে যায়,এই অঞ্চলের নিষ্কাশন ব্যবস্থা যে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হবে,এখনই বৃষ্টি হলে হাঁটু পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে যায়। সেই জল কোথায় যাবে? পৌর কর্তৃপক্ষ কেন এদিকে নজর দিচ্ছে না আমরা জানি না। কোন স্বার্থ কি জড়িত রয়েছে?

এই অঞ্চলের অধিবাসীরা বলেন, এটা একটা বিশাল পুকুর ছিল, এখানে ঘাট করা ছিল এবং স্নানের ব্যবস্থাও ছিল। কিন্তু সিপিএম রাজত্বকাল শেষ হয়ে নতুন রাজত্বকাল আসার পরে এটি ভরাট শুরু হয়ে যায়। কেন? কি কারণে কারা করছে? সেটা আমরা এখন এতো খুলে বলতে পারব না। এই পুকুরটির মালিক চাঁদপাল বলে আমরা জানি। পুকুরটি সূর্যপুকুর নামে পরিচিত। এই কথা মহিলারা বলছেন।

এই অঞ্চলের আরেকজন অধিবাসী কানুলাল মজুমদার তিনি পরিষ্কার বলেন যে,আমরা এই পুকুরটির ব্যাপারে কোথায় না গিয়েছি! থানা প্রশাসন, পৌর প্রশাসন, বি এল আরও অফিস,এমএলএ সকলের কাছে গিয়েছি,কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না। পুকুরটি ভরাট হয়েই চলেছে।

এরপর বিষয়টি উপ পৌরপ্রধান মাখন সিনহার গোচরে আনা হলে তিনি জানান যে, পুকুর ভরাট বিষয়টির খবর আমি পেয়েছি। আজও পুকুরটি ভরাট চলছে। কিন্তু কাউন্সিলরের কাছ থেকে খবর পাওয়া মাত্র আমি ব্যবস্থা নিয়েছি। পৌরকর্মীকে এটা দেখভাল তথা তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি চলে গেছেন সেখানে এবং রিপোর্ট দেবেন। ‌ যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের আমরা ডাকাবো। তিনি জানান যে, তদন্তকারী পৌর কর্মী রিপোর্ট দেবেন। ‌ সেইসঙ্গে আমি এও পরিষ্কার করে জানাচ্ছি যে,যদি এই পুকুরটি পুকুর হয়ে থাকে অর্থাৎ বাস্তু জমিতে যদি পরিণত না হয়ে থাকে,তাহলে এই পুকুরটি আবার খনন করা হবে।

এ ব্যাপারে ওয়ার্ডবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানান, তাদের দাবি যে পুকুরটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক অর্থাৎ পুনরায় পুকুরে ফিরিয়ে আনা হোক। যাতে এখানকার নিষ্কাশন ব্যবস্থা যথাযথ থাকে। আমরা সেটিই চাইছি।