বিনয় ভরদ্বাজ ,অবতক খবর , সংবাদদাতা :: পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোভিড রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু নিয়ে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। বহু করোনা মৃত সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে করোনা না দেখিয়ে অন্য কথা লেখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের আসল তথ্য গোপন করছেন। এই অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতা সহ অন্যান্য বিরোধীরা। রাজ্যপাল নিজেই এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ও রাজ্য সরকারের ভূমিকার নিন্দা করেছেন।

তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে রাজ্য সরকার যে তথ্য করোনা নিয়ে দিচ্ছে তাকে কেউই বিশ্বাস করতে পারছে না। এমন অবস্থায় সরকারকে তথ্য নিয়ে ট্রান্সপারেন্ট হওয়ার দরকার। তিনি অভিযোগ করেন যে সরকারের কাছে কোভিডের তথ্য নিয়ে কোনো ম্যাকানিজম নেই। চিকিৎসার বিষয়ে চিকিৎসকরা ক্ষোভ ব্যক্ত করছেন‌। তাই সরকারকে আরও সক্রিয় ও বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপি ও রাজ্যপালের রিপোর্টকে ভিত্তি করেই রাজ্যে কেন্দ্র প্রতিনিধি দল পাঠায় সোমবার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দ্বারা পাঠানো পাঁচ সদস্যের দলকে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের অতিরিক্ত স্বরাষ্ট্রসচিব অপূর্ব চন্দ্র অভিযোগ করেন যে রাজ্য সরকার তাদের সঙ্গে কোনো রকম সহযোগিতা করছে না ও তাদের কোথাও যেতে দিচ্ছে না।

কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মণ্ডলের সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা  নিজে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি দিয়ে পরিস্কার নির্দেশ দেন যে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশাবলী মেনে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে তা সব রকম ভাবে যেন পালন করা হয়।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের এই চিঠির পর রাজ্য সরকার সুর নরম করে তাদের সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা পাল্টা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মণ্ডলের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে, যে রিপোর্ট রাজ্য সম্পর্কে দেওয়া হয়েছে অসহযোগিতার সেটাও ঠিক নয়। তিনি জানান যেহেতু আগে থেকে চিঠির দিয়ে বা কোনোভাবে না জানিয়েই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মন্ডল দল রাজ্যে এসেছে তাই তাদের ব্যবস্থা কিছুটা খামতি থেকে গেছে।

সবমিলিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মন্ডল কলকাতা প্রবেশ করতেই একদিন এই রাজ্য রোগীর সংখ্যা প্রায় 53 জন বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ দুপুর পর্যন্ত বৃদ্ধি ঘটে রাজ্যের বর্তমান করোনা আক্রান্তের সংখ্যা 423 হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে মোট 73 জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন্ বর্তমানে ভর্তি করোণা রোগীর সংখ্যা রাজ্যে 335 জন। মৃতের সংখ্যা 15 জন।

উল্লেখ্য রাজ্য সমস্ত করোনা রোগের বিস্তারিত রিপোর্ট এখনো সঠিকভাবে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হচ্ছে । যে 7 জেলাকে করোনা রেড জোন বলে ঘোষিত করা হয়েছে,সেসব জেলার রোগীদের সমস্ত তথ্য কেন্দ্র সরকারকে পাঠানো হচ্ছে না। তাই সেসব জেলার এলাকাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

এই পর্যন্ত দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী কলকাতা ,হাওড়া, উত্তর 24 পরগনা, নদিয়া, মেদিনীপুর, হুগলি, ও জলপাইগুড়িকে করোনা রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সাতটি জেলায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়া ও এই জেলায় রোগীদের তথ্য সমস্ত ভালো করে  যাচাই করা ও ব্যাপকভাবে টেস্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।