অবতক খবর ,সংবাদদাতা, বালুরঘাট :- বৃহস্পতি বার গভীর রাতে ৩০টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মঘাতী হলেন বালুরঘাট সদর ট্রাফিক ওসি। বৃহস্পতিবার রাতে বালুরঘাটের চকভবনী এলাকার পুলিশ কোয়াটারের ঘটনা। মৃত ওই পুলিশ অফিসারের নাম সুদীপ্ত দাস (৪৯)। এই ঘটনা নিয়ে পরকীয়া সম্পর্ককে দায়ী করেছেন মৃতের পরিবার। নিজের স্ত্রী সন্তানকে ডিভোর্স দিয়ে সামাজিক মর্যাদা আদায়ে এক মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ারের চাপ সৃষ্টি করাই আত্মহত্যার কারণ বলে মনে করছেন তারা।
যদিও জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। তাছাড়াও দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক বলে তিনি জেনেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, স্থায়ী বাড়ি মালদায় হলেও কর্মসূত্রে স্ত্রী সহ এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বালুরঘাটে থাকতেন সুদীপ্ত দাস। কর্মসূত্রে প্রথমে গঙ্গারামপুরে ট্রাফিক ওসি, পরে কুমারগঞ্জ থানায় ওসি এবং শেষে বালুরঘাটে পোষ্টিং হয়েছিল তার। সূত্রের খবর কুমারগঞ্জ থাকাকালীন ২০১৮ সালে সেই থানায় কর্মরত এক মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ারের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্কেও জড়িয়ে ছিলেন তারা। আর যাকে হাতিয়ার করেই ওই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার ট্রাফিক ওসির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। নিজের স্ত্রী সন্তানকে ডিভোর্স দিয়ে তাকে সামাজিক মর্যাদা দেয়া হোক এই বলে চাপ দেয়া হতো বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয় এমন ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক ওসির কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতেও ওই একই ঘটনা নিয়ে ফোনে কথা হচ্ছিল তাদের বলে সূত্রের খবর। যার পরেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন তিনি, বলে জানা গেছে। গভীর রাতে পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জানা গেছে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন ওই পুলিশ অফিসার। যে কারণে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তার কাছে ঘুমের ওষুধ থাকতো। যেখান থেকেই একবারে অনেকগুলি ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন তিনি। শুক্রবার সকালে ট্রাফিক ওসি মৃত্যুর ঘটনা জানতে না পেরে মোবাইলে একাধিকবার ম্যাসেজ করেছেন ওই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার। যেখানে সামাজিক মর্যাদা দেওয়ার দাবি সহ একাধিক দিক তুলে ধরেছেন তিনি। এদিন এমনসব ঘটনাসহ আরো বেশ কিছু তথ্য পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ট্রাফিকের পরিবার।
মৃতের স্ত্রী সোমা দাস জানিয়েছেন, অবৈধ সম্পর্ককে হাতিয়ার করে সামাজিক মর্যাদা আদায়ের দাবিতে তার স্বামীর উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল ওই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার। আর যার কারণে মৃত্যু হয়েছে তার স্বামীর। ঘটনা জানিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন।
মৃতের দাদা জয়ন্ত কুমার দাস জানিয়েছেন, তিনি আলাদা থাকলেও বেশ কিছুদিন ধরে এমন খবর পাচ্ছিলেন। এই ঘটনা পুলিশকে সঠিক তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।