করোনা এলো, পরিযায়ী শব্দটির গুরুত্ব খুব বেড়ে গেল। আমাদের বেদনাও পরিযায়ী হয়ে ঘুরতে লাগলো।

পঞ্চবাণ
তমাল সাহা

১)
সেদিন স্বপ্নে
আমায় দেখা দিলেন যোগী আদিত্য। ‌
বললেন, আপনার তো খুব কবিত্ব!

এই যে ভুখা মজুরদের
করা হলো জীবাণুনাশী স্প্রে,
একে আপনি কি বলতে চান?
ঘরের বাইরে বেরিয়ে দেখি,
দাঁড়িয়ে পেশীবহুল সব মস্তান।

শিরদাঁড়া বেঁকিয়ে আমি বলি,
ধুর্! স্প্রে কোথায়?
এ তো শুদ্ধস্নান!

২)
পরিযায়ী শব্দটি এখন খুব খায়,
পরিযায়ীর পরে শ্রমিক শব্দটি
বসে গেছে অন্য মাত্রায়।

এখন এদের নিয়ে খুব শোরগোল,
আমিও কবিতা লিখে ফেলি একপাতা। ‌
আমার পেটভর্তি খাবার,
ওদের জোটেনা এক হাতা।

৩)
দিন আনে দিন খায়—
তারা তো মজুর।
আর যারা বাকি
তারা তো ওদের হুজুর।

দিন আনি, দিন খাই—
বাক্যটির তাৎপর্য গভীর।
দিন খেয়ে দিন আনি—
সেতো যুদ্ধজয়ী বীর।

৪)
এত বড় বড় দুটো চোখ!
তুই এতদিন কোথায় ছিলি?
করোনা কী ভালো তুই!
চোখের পাতা খুলে দিলি।

শুধু হাঁটো, দানাপানি নেই পেটে।
হাঁটতে হাঁটতে জীবন যাবে কেটে।
পরিযায়ী শব্দটি পেয়েছ শিরোপা
আর কি চাই? চালাও জোরে পা।

৫)
কাঁধে শিশু মাথায় বোচকা সঙ্গে পরিবার
ওরা কোথা থেকে আসে কোথায় যায়?
আইসোলেশন শব্দটি শিখে গেছে ওরা
করোনা রটে গেছে হাওয়ায় হাওয়ায়।

নিজের দুয়ারে অর্গল।
ওদের রাষ্ট্র
ওদের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়ায়।