অবতক,১০ জানুয়ারিঃ ৯ জানুয়ারি ঘটনা ঘটে গেছে। এখন প্রশাসনের টনক নড়েছে। বিশাল তোড়জোড়। বোম ডিসপোজাল স্কোয়াডের ৫ জন অফিসার হাজির। হাজির নৈহাটির চেয়ারম্যান অশোক চ্যাটার্জী,সিআইসি সনৎ দে। হাজির স্বয়ং বিডিও পীযূষ কান্তি সরকার। গঙ্গার ধারে যেখানে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল সেই অঞ্চলটি ঘিরে ফেলা হয়েছে বিশাল কাছির দড়ি দিয়ে। ডোন্ট ক্রশ- হলুদ ফিতে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থলের এক অংশে গার্ডওয়াল দেওয়া রয়েছে।রয়েছে পুলিশ বাহিনীর গাড়ি,সবাই প্রস্তুত।

হিসেব নিকেশ চলছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কি, কারা কারা আহত। বাড়িঘর যেগুলো ভেঙেছে,ফাটল ধরেছে শীঘ্রই তা মেরামতি করে দেওয়া হবে। প্রতিশ্রুতি চলছে। গতকাল বারাসাত ময়দান থেকে মুখ্যমন্ত্রী যিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তিনি পার্থ ভৌমিককে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে বলেছেন। যথাসম্ভব এবং যথা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করতে বলেছেন।

এখানে এখন কৌতূহলী মানুষের প্রচুর ভিড়। যেখানে ডিসপোজাল করা হয়েছে সেটি একটি হলুদ এবং নীল রঙের পলিথিন দিয়ে সেই গর্তটি আটকে রাখা হয়েছে। গর্তটি প্রায় ৮ ফুট গভীর বলে সূত্রের খবর। এখানে ফরেনসিক দল আসবেন ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য। এদিকে দেবক গ্রাম থেকে যে গাড়ির পর গাড়ি বারুদ বেরিয়ে গিয়েছে পুলিশের সামনে দিয়ে, ঘটনার দুদিন পরে সেই বারুদগুলো কোথায় গেল তার পরিমাণ কি, সেই বারুদে বিস্ফোরণ ঘটে গেলে তার মাত্রা কি হবে এই নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। নাকি এগুলো আগামী নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে, এ প্রশ্নও তারা তুলছেন।

দেবক গ্রাম জুড়ে কুটির শিল্পের মতো বারুদ কারখানা গড়ে উঠল কেন? দীর্ঘ বছর ধরে সেই কারখানা চলছে কেন? ৫ জন মানুষ ঘটনাস্থলে মারা গেলেন। এর আগের বছরও দুজন মারা গিয়েছিলেন। হালিশহরেও বারুদ কারখানা রয়েছে সেখানে ৩ জন দু’বছর আগে মারা গেছেন। প্রশ্ন উঠছে যে, প্রশাসন সেইসব বারুদ কারখানার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেবেন? বারুদ কারখানাগুলো বন্ধ করবেন কিনা? সে ব্যাপারে তারা কিছুই বলছেন না। তারা জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন।

মানুষ বলছেন, এই হাভাতে দেশে হাজার হাজার মানুষ পেটের দানাপানির জন্য বারুদ কারখানায় কাজ করেন। তারা জানেন একদিন মরতেই হবে, তাহলে বোমা বিস্ফোরণেই মরব। তারা বলছেন যে, এই কারখানাগুলি কিছুতেই সরকারিভাবে বন্ধ হবে না। কারণ এর সঙ্গে জড়িত পার্টি নেতারা। খবর পাওয়া গেছে দেবকে পঞ্চায়েত সদস্য পর্যন্ত বাজির কারখানার মালিক। আর এর মধ্যে দিয়ে যে কামাইবাজি চলে‌ তা পরিষ্কার এবং এর সঙ্গে পার্টি,পার্টির নেতা, পুলিশ এবং এই বারুদ মাফিয়া জড়িত। লক্ষ লক্ষ টাকার আমদানি যেখানে, সেখানে মানুষের মৃত্যু কোন ব্যাপারই নয়। মৃত্যুর বদলে যদি মুদ্রা মোহর পাওয়া যায় তাহলে কেন বারুদ কারখানাগুলি তুলে দেবেন বেসরকারি মাতব্বর এবং প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত যারা?