অবতক-এর বিশেষ প্রতিবেদন
এবার বীজপুরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আগমন

অবতক, ২৩ জানুয়ারিঃ বহু বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব সুভাষচন্দ্র বসু, যাকে আমরা নেতাজি বলে জানি।
হায়!কোনদিন তিনি ছিলেন এক ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের মানুষ। তাকে কুইসলিং, কখনও বা তোজোর কুকুর বলে অভিহিত করা হয়েছিল। তাকে বলা হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদের পা-চাটা দালাল।
তিনি জাপানে তোজোর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।তিনি বার্লিনে হিটলারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

দেশপ্রেম শব্দটির অপর নাম নেতাজি। আজ বিশ্বে এ নামের কোন বিকল্প নেই। সেই মানুষটির জন্মদিন আজ, যিনি জাতির জনক গান্ধীজির সঙ্গে বিতর্কে পর্যন্ত জড়িয়েছিলেন দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে, দেশপ্রেমের প্রশ্নে। যাকে রুখে দিতে হাতে তরবারি পর্যন্ত তুলে নিতে চেয়েছিলেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নাম। এই মানুষটি একদিন বীজপুরে পদার্পণ করেছিলেন।পদার্পণ করেছিলেন ভাগীরথীর উপকূলে আমাদের ঐতিহাসিক ভূমি হালিসহরে। ঊনিশশ সাতাশ সাল। সুভাষ বসু মান্দালয় জেল থেকে ছাড়া পেলেন। তাঁর চোখে মুখে তখন বৈপ্লবিক চেতনা, অন্য ধারা— সশস্ত্র আন্দোলনের ধারা। সুশীল কুমার ঘোষ। হালিসহর চৌধুরীপাড়ায় মানুষ। হরিভবন নামে সেই বাড়ি আজও আছে। সুশীল কুমার ঘোষ ছিলেন সেই সময় বীজপুর কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি আয়োজন করলেন সুভাষচন্দ্র বসুকে সম্বর্ধনা প্রদানের।

হালিসহরের এই ক্রেগ পার্ক যা বর্তমানে বিপ্লবী বিপিনবিহারী পার্ক নামে পরিচিত, সেই পার্কে তাঁকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। আগে এই পার্কটির নাম নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে করবার কথা হয়েছিল। কিন্তু কেউ কথা রাখেনি, কেউ কথা রাখেনা।

থাক সে কথা, সেই সম্বর্ধনায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। তিনি আতিথেয়তা গ্রহণ করেছিলেন এই সুশীল কুমার ঘোষের বাড়িতে। তাঁকে গাছ থেকে ডাব পেড়ে খাইয়েছিলেন সুশীল কুমার ঘোষ এবং হালিসহর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ধীরেন্দ্রনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরো শুনুন বীজপুরের সৌভাগ্যের কথা। পরবর্তীতে সুশীল কুমার ঘোষ হয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসুর একান্ত সচিব।
ঊনিশশ তেষট্টি। সে কী হইচই!
কল্যাণীতে নেতাজি এসেছেন এমন রব উঠল। শনাক্ত করতে পাঠানো হয়েছিল তাঁর একান্ত সচিব এই সুশীল কুমার ঘোষকে। আর ইন্দিরা গান্ধী যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী তখন নেতাজির রিস্টওয়াচ শনাক্ত করে দিয়েছিলেন সুশীল কুমার ঘোষ। ইন্দিরা গান্ধী স্বয়ং তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন এই রিস্টওয়াচটি শনাক্ত করার। এমন সব ইতিহাস লিখে রেখেছে বীজপুর।
বীজপুর আজ গর্বিত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কোনোদিন এই ভূমিতে পা রেখেছিলেন।

আরো কি কিছু বলার আছে?
আছে। উল্লেখ্য সুশীল কুমার ঘোষ আর সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনের তারিখ একই। ২৩ জানুয়ারি। সুশীল কুমার ঘোষের মাকে সুভাষচন্দ্র বসু মা বলেই ডাকতেন।

সুশীল কুমার ঘোষের কাছে লেখা সুভাষচন্দ্রের একটি চিঠি এখনও এই লেখকের সংগ্রহে রয়েছে।