অবতক খবর : নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে রাজ্যে নির্বাচন নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে। রাজ্যে ৮ দফা নির্বাচন হতে চলেছে। এই আট দফার নির্বাচনের দিনক্ষণ ইতিমধ্যে সামনে চলে এসেছে। এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে শেষ পর্যায়ে বৈঠক শুরু করেছে। রাজ্যে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল তৃণমূল আর বিজেপি আলাদা আলাদা করে তাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে বৈঠক করেছে, বৈঠকে বসেছে তৃতীয় ফ্রন্ট বামপন্থী-কংগ্রেসী-আব্বাস সিদ্দিকের সেকুলার ফ্রন্টের নেতারা।

তৃণমূলের প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করতে কালীঘাটে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের সমস্ত প্রথম সারির নেতা নেত্রীদের নিয়ে। বৈঠকে প্রার্থীদের নাম নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা হয়েছে জেলা থেকে পাঠানো প্রার্থীদের তালিকা নিয়েও। শেষ পর্যন্ত জানা গেছে প্রার্থীদের তালিকা মোটামুটি চূড়ান্ত করে ফেলেছেন নেত্রী। এই বৈঠকে বিশেষ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন নেত্রী । জানা গেছে এবার তৃণমূল নেত্রী যুবকদের উপর বেশি জোর দিয়েছেন।

প্রার্থী বাছাই করতে নেত্রী বেশ কিছু জিনিসকে প্রাধান্য দিয়েছেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী 80 বছরের বেশি বয়সীদের আর প্রার্থী করছে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত এই যে অসুস্থ রোগগ্রস্তদের এবার প্রার্থী করছেন না দল। তৃতীয় সিদ্ধান্ত এবার তৃণমূলের যুব প্রার্থী করতে বেশি আগ্রহ দেখানো হয়েছে। তা ছাড়াও প্রায় 100 জন মহিলাদের প্রার্থী করছে দল। কালীঘাটের সূত্র অনুযায়ী 40% প্রার্থী নব যুবক ও নতুন মুখ হতে চলেছে তৃণমূলে এই প্রথম। তবে তাতে জায়গা করে নিয়েছেন বেশকিছু সেলিব্রেটিরা।

অন্যদিকে বিজেপি একটি পাঁচতারা হোটেলের প্রথম দু’দফায় যেসকল বিধানসভাকে নিয়ে ভোট হতে চলেছে তাদের সেই সাতটি বিধানসভার প্রার্থীদের তালিকা ফাইনাল করতে বৈঠক করে। বিজেপির রাজ্যের প্রধান নেতারা উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিবরাত্রি, কৈলাশ বিজয় বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, সৌমিত্র খাঁ সহ সকল নেতৃত্ব। তাছাড়াও বৈঠকে ডাকা হয়েছিল জেলার জেলা সভাপতি সাংসদ ও হেভিওয়েট নেতাদের।

নটি জেলার সাতটি আসনে প্রার্থীদের তালিকা– নাম ফাইনাল করে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাঠাবেন বলে খবর। সেখান থেকে আগামী 4 ফেব্রুয়ারি বৈঠকে এই তালিকা নিয়ে বিবেচনা করে প্রার্থী চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবেন কেন্দ্রীয় নেতারাই।

অন্যদিকে রাজ্যের তৃতীয় ফ্রন্ট হিসেবে নির্বাচনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অর্থাৎ বাম, কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকীর সেকুলার ফ্রন্ট তারাও তাদের প্রার্থী তালিকা ও সিট ভাগাভাগি সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু সূর্যকান্ত মিশ্র সহযোগী নেতারা। অন্যদিকে কংগ্রেসের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস অধ্যক্ষ অধীর চৌধুরী এবং প্রদীপ ভট্টাচার্য্য।

জানা গেছে কংগ্রেস 92 টি আসনে এই মুহূর্তে লড়তে চলেছে যদিও আব্বাস সিদ্দিকী কংগ্রেসের থেকে 15টি আসন দাবি করেছেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী অধীর চৌধুরী মাত্র সাতটি আসন ছাড়তে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া তিনি তার বেশি দিতে রাজি নন। এমন অবস্থায় সিটের চূড়ান্ত ভাগাভাগি এখনো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী 294 টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস লড়বে 92 টি আসনে আব্বাসের দল 30 টি আসনে এবং বাকি আসনের বাম প্রার্থীরা দাঁড়াতে চলেছেন।

অধীর চৌধুরীকে আব্বাসের দল সেক্যুলার ফ্রন্টের জন্য সিট ছাড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ব্যাপারটি এড়িয়ে যান। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন এখনো অবধি বামেদের সাথে তাদের সিট রফা ফাইনাল হয়নি। সব মিলিয়ে এখন সব দলই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে ব্যতিব্যস্ত।