আমি সোচ্চারে বলি অক্ষরসজ্জাই আমার ঈশ্বর।
আমি সত্যভাষী স্বর। আমার স্বজনেরা এখন রাষ্ট্রের দ্বারা আক্রান্ত। আমিও নই অবিনশ্বর। চলে যেতে পারি।তাই খোদাই করি জীবনের অক্ষর।
এই কালরাতে রবীন্দ্রনাথ তোমাকে করি আশ্রয়।
আমার চারিদিকে ছড়ানো ছিটোনো স্বজনের শব।
আমি আজ লিখতে পারি কোন স্তব!

নব বীরবেশে
তমাল সাহা

তুমি বলেছ অনেক কথা বারেবারে
জগত সভায় মেনেছে সবাই
আমরা তুচ্ছ করেছি অহঙ্কারে।

আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে
ধর্মমোহে জাতি মরে আর মারে
ফিরায়ে দিয়েছি সব অন্ধ সংস্কারে
তোমাকে সরিয়ে দিয়েছি ব্যর্থ নমস্কারে।

দিবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে
এখনও রথচক্র ঘোরে
নীল জলধি ভারত সাগর তীরে।
দলিত অন্ত্যজ-আর্তরব বাতাস পূর্ণ করে।

হিংসা দ্বেষে কুটিল তোমার স্বদেশ
লুঠেরাদের চালে পুঁতিগন্ধময় পরিবেশ
বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত আশ্রয়দাত্রী প্রকৃতি
মুনাফার মোহে ধনিকের দ্রুত ধাবমান গতি।

শত শত সাম্রাজ্যের ভগ্নশেষ পরে
ওরা কাজ করে না আর
স্বাধীন দেশ ঋণে জর্জরিত আত্মহত্যা করে
কারখানা তালাবন্দী–মালিক নেতা পরামর্শ করে
পানপাত্রের আসরে।

আমার মাথা নত করে দাও হে প্রভু
তোমার চরণ ধুলার পরে…
পেটের দানাপানির অগ্নি জ্বলে জঠরে
তোমার এই প্রার্থনা
গুরুত্ব কি আর পায় এই সংকট প্রহরে!

তাহলে তোমার সেই বাণী
উচ্চারণ করি আজ
উপলব্ধি করেছিল অনুজ কবি
পূর্ব কোণে লাল হয়ে জ্বলুক রবি
‘শান্তির ললিত বাণী শোনাইবে ব্যর্থ পরিহাস’
হতে চাই কালের ইতিহাস।

প্রার্থনা করি অবশেষে
‘আঘাত সংঘাত মাঝে দাঁড়াইনু আসি’
হস্তে তুলে দাও তরবারি
‘করো মোরে সম্মানিত নব বীরবেশে’।