অবতক খবর , সংবাদদাতা ,আসানসোল:-  শস্যশ্যামলা বাংলার এক অনন্য চিত্র ফুটে উঠেছে এবার। চলতি বছরে পরিবেশ দূষণের সমস্যা অনেকটা কমেছে। বৃষ্টিও হয়েছে পর্যাপ্ত। তাই শিল্পাঞ্চলের জেলা পশ্চিম বর্ধমানের জমিও সবুজ। ধানে ভরে উঠেছে জমি। কৃষিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় জেলায় দ্বিগুণ জমিতে ধান চাষ হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এবার উৎপাদনও বাড়বে। কিন্তু সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা না বাড়ায় হতাশ জেলার চাষিরা। গত বছরের মতো ৬০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। তাই ধান বিক্রি করে বাড়তি রোজগারের আশায় থাকা চাষিদের মন ভেঙেছে। তাঁদের দাবি, ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে চাষিদের ঘরে বাড়তি টাকা জোগানোর উদ্যোগ নিক সরকার।কথায় আছে, খারাপেরও একটা ভালো দিক থাকে। করোনা এখন বিশ্বের কাছে অভিশাপ। অর্থনীতি, সমাজ ব্যবস্থা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে এই অতিমারী। মানুষের কাছ থেকে উৎসবের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু এর মাঝেও করোনার জেরেই পরিবেশ দূষণ কমেছে। পাশাপাশি বৃষ্টিও হয়েছে সময় মতো। তার ফলে খনি এলাকার মাঠও ধানে ভরে উঠেছে।তবে প্রকৃতির পাশাপাশি কৃষিদপ্তরের উদ্যোগও ছিল প্রশংসনীয়। করোনার জেরে বহু মানুষই বাইরে থেকে এই জেলায় ফিরে আসেন। অনেকে কৃষিকাজে যোগ দেন। মানুষের মধ্যে চাষ করার প্রবণতাও বাড়ে। বিষয়টি মাথায় রেখে ৫০০ হেক্টর বেশি বীজতলা তৈরি করা হয়েছিল। অতিরিক্ত ২৫ টন বীজে পাঁচ হাজার হেক্টর জমি বেশি চাষ হয়েছে। সরকারি হিসেবে এই জেলায় এবার চাষ হয়েছে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলনও অত্যন্ত ভালো হয়েছে। তাই শিল্প অধ্যুষিত জেলা হলেও পশ্চিম বর্ধমান জেলার চাষিরা এবার বাড়তি ধান উৎপন্ন করেছেন। এতে এই মহামারীর সময়ে বাড়তি টাকা রোজগারেরও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন জেলার চাষিরা। অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বাড়বে। কিন্তু তা না হওয়ায় তাঁরা হতাশ।
খাদ্যদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ২৬হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। তাতেই জেলার চাষিরা ৬০ হাজার মেট্রিক টন ধান সরকারি ব্যবস্থায় বিক্রি করেছিলেন। এবার চাষের জমি বাড়ার পাশাপাশি ফলনও অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা না বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত বছরের যে লক্ষ্যমাত্র ছিল সেটাই রেখে দেওয়া হয়েছে।

এবার খাদ্যদপ্তর সিপিসি ও ডিপিসির মাধ্যমে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন, ইসিএসসি ১৫ হাজার মেট্রিক টন ও বেনফেড ১৫ হাজার হেক্টর ধান কিনবে। সহায়ক মূল্য‌ও বেড়েছে। প্রতি কুইন্টাল ১৮৬৮ টাকা দরে ধান কেনা হবে। তবে অন্যবার বেনফেড এই জেলায় ধান নিত না। এবারই তারা প্রথম অংশ নিচ্ছে। তাই তারা ধান কিনতে কতটা সফল হবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
বারাবনির চাষি রবিন সাধু, সালানপুরের চাষি কালীপদ মণ্ডল বলেন, আমরা সরকারের কাছেই সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে চাই। এবার ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। সরকার আমাদের জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বাড়াক, এটাই আমরা চাই।