স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত

দ্বিখণ্ডিত
তমাল সাহা

পা ফেলতে ফেলতে
কারা চলে যায় কোন অভিমুখে
মাটির এপারে ওপারে কত দূরে!

তখনও মায়াময় চোখ দুটি খোলা থাকে আকাশের দিকে।
তার পর একের পর এক দৃশ্যপট খুলতে থাকে—
বসত ভিটের গা ছুঁয়ে রেললাইন চলে গিয়েছে। সবুজ রঙের গাড়ি ইস্টবেঙ্গল মেল ছুটে যায় এপার থেকে ওপার আবার ফিরে আসে এপারে‌।

পড়ে থাকে ধান খেত, তরমুজের বাগান
চোখে ভাসে পোড়ো মন্দির-কীর্তনের সুর, পীরের মাজারে জ্বলে সন্ধের চিরাগ।

মনসুর আলীর কথা মনে পড়ে, মনে পড়ে ফতেমা চাচির কথা, ভেসে ওঠে সায়েদার মুখ।

ঈদের বাঁকা চাঁদ, দোল পূর্ণিমার গোল চাঁদ
সে তো একই আকাশে ওঠে!
রমজানের ইফতার, সত্যনারায়ণের সিন্নি
সব ছবির মতো চোখের তারায়।
তাহলে শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়ায়?

সীমান্তে কাঁটাতার একই জন্মভূমি দু’ভাগ হয়ে যায়!

আফসোস আক্ষেপ বিষাদ না বিমূর্ত ভালবাসা
একে কী বলবে তুমি?
শুধু একটিই উচ্চারণ একটিই ডাক
জন্মভূমি! জন্মভূমি!

কোন তীরে এসে ভিড়লে তুমি!
মাতলা না গড়াইয়ের পাড়ে,
পদ্মাপারে না ভাগীরথী তীরে?
তোমার বেহেশত, তোমার স্বর্গ, তোমার জাহান্নাম, তোমার নরক তো এই ভিটেতেই!

দ্বিখণ্ডিত হলো বুক না দেশ!
তোমার দুচোখে সম্বল পানি,
তোমার দুহাতে সম্বল অশ্রু গড়াতেই থাকে….

তোমার জন্মভূমি! তোমার স্বাধীনতা!