দেওয়াল/তমাল সাহা

আজ ২৫ মে। দেওয়াল সে সময় একটি শিল্প হয়ে উঠেছিল। সেই দেওয়ালের গল্প লিখি আজ। দেওয়াল মানেই আত্মত্যাগ!

দেওয়াল
তমাল সাহা

দেওয়ালগুলিও এখন বিষাদ লেখে। বোধহয় বিষণ্ণ চোখে তারা মাথা নিচু করে থাকে।

বন্দুকের নলই রাজনৈতি…. লিখতে লিখতে উপুড় হয়ে পড়ল তরুণটি। গুলিটা পিঠ ফুঁড়ে দেয়ালে গিয়ে লাগলো। হাতের ব্রাশ আর ভুসোকালির মালসা ছিটকে গেল।
অদূরে শব্দ শুনে কুকুর-কুকুরী এত ভীত হয়ে পড়ল, সঙ্গমের পালা ভেস্তে দিয়ে দ্রুত দৌড়ে গলির ভেতরে পালিয়ে গেল।

আমি
সেইসব দেওয়ালগুলির পাশ দিয়ে চলে যাই।
স্টেনসিলে মাও সে তুংয়ের মুখ,
যে চিত্রশিল্পী তৈরি করেছিল সেই মুখটি , তার হাতের নৈপুণ্য বা দেওয়াললিপির শব্দগুলি দেখতে থাকি।
কৃষি বিপ্লব ত্বরান্বিত করুন অথবা
শহীদের রক্তের নামে শপথ বা
বিপ্লবীকে খতম করা যায় বিপ্লবকে নয়—
সব অনুষঙ্গ ক্ষতচিহ্নের মতো জেগে ওঠে।

আমি হাঁটতে হাঁটতে শ্মশানের দিকে চলে যাই।
মনে পড়ে এই দেওয়ালটিতে কোনোদিন লেখা ছিল, কমরেড তোকে ভুলছি না, ভুলবো না– স্মৃতিভারে আক্রান্ত হয়ে পড়ি।

এখন আর সেই সব দেওয়াল নেই
অনেক দেওয়ালই প্রোমোটারের পাল্লায় আবাসনের দখলে চলে গেছে।
সেই বিশাল বিস্ময়ী দেওয়ালটি বেলেঘাটায় আছে কিনা জানিনা
যেখানে পিঠ ঠেকিয়ে চোখবেঁধে পাঁচটি যুবককে গুলি করেছিল ফায়ারিং স্কোয়াড।
দমদম প্রেসিডেন্সি আলিপুর হুগলি বহরমপুরের দেওয়ালগুলি এখনো আছে।
এই প্রাচীর টপকেই ওরা পালাতে গিয়েছিল।
ওরা নেই!
দেওয়ালগুলি ওদের রক্তের গন্ধ নিয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে…

এবং হতভাগ্য আমি!