বিনয় ভরদ্বাজ, অবতাক খবর, ৭ই ডিসেম্বর :: নদীয়া জেলার কিষান মোর্চার সভাপতি সজল দে এবার তৃণমূলে জয়েন করতে চলেছেন। হ্যাঁ,এবারএটা শুধু গুজব নয় সত্যিকারের ঘটনা। আর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি তৃণমূলে যোগদান করবেন বলে জানা গেছে। সূত্রে জানা গেছে তার সঙ্গে জেলার অবজারভার ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক প্রতিনিধির মাধ্যমে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি অভিষেকের প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে যোগদান করছেন বলে জানা গেছে।

যদিও সজল দের এভাবে তৃণমূলে যোগদানের ব্যাপারটি খুব গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূলের কল্যাণী টাউন সভাপতি অরূপ মুখার্জি। অরূপ মুখার্জি ওরফে টিংকু মুখার্জি জানান, তিনিও কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে এ খবর শুনতে পেরেছেন কিন্তু তাদের সাথে কোনরকম যোগাযোগ হয়নি। শুধু তাই নয় জেলা তৃণমূল সভাপতি শংকর সিংহ নিজেও এই ব্যাপারটি নিয়ে ওয়াকিবহাল নন।

সূত্রে জানা গেছে , বিশেষ করে কল্যাণীতে যেভাবে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক হানাহানি শুরু হয়েছে আর বিজেপিতে যেভাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়ছে এতে ক্ষিপ্ত হয়েই সজল দে তৃণমূলে জয়েন করতে চাইছেন যদিও কল্যাণীতে সজল দের উপস্থিতির জন্য বিজেপি এবার গত লোকসভা নির্বাচনে বেশ ভালো ফল করতে পেরেছে। কল্যাণী শহরে সজল দে বিজেপির একটি শক্তপোক্ত নেতা বলে পরিচিত।

সজল দে মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন কিন্তু পরবর্তীকালে কল্যাণীতে তৃণমূলের শেষ কথা অরূপ মুখার্জি ওরফে টিংকুর সাথে বনিবনা না হওয়ায় তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন আর এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে তৃণমূলীরা তার ঘর বাড়ি ঘেরাও করে তাকে খুনের চক্রান্ত’ করে। সজল বাবু এক সাক্ষাৎকারে অবতক-কে জানান যে এই বিজেপি করার জন্য তৃণমূলীরা তাকে খুনের চক্রান্ত’ করেছিল শুধু তাই নয় পুলিশের হাতেও তিনি খুন হতে হতে বেঁচে গেছেন। তাকে সেফগার্ড দেওয়ার জন্য তিনি কল্যাণী রথতলা যুবকদের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবেন। তিনি আরও জানিয়েছিলেন যে তাকে 23 মাস জেলে জোর করে একটি ছোট্ট ঘরে বন্ধ করে রেখে দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয় কল্যাণী জেল থেকে তাকে জোর করে দমদম জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার সাথে জেলেও অত্যাচার করা হয়েছিল।

সজল দে জেল থেকে বেরিয়ে এলাকায় ঢুকতে যে উৎসব পালন হয়েছিল তাতে রথতলা শুধু নয় পুরো কল্যাণী ও আশেপাশে কাঁচরাপাড়া ও গয়েশপুর অঞ্চলের তৃণমূলীরাও আঁতকে উঠেছিলেন। সজলের বেরিয়ে আসার পর অরূপ মুখার্জির ঘুম উড়ে গেছিল। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে এসে সজল জানায় তিনি জেলে থেকে অনেক কিছুই শিখছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন যে রাজনীতিতে কেউ কারো চিরকালের শত্রু বা বন্ধু নয়। সজল বাবু আরও জানিয়েছিলেন যে তিনি বদলার রাজনীতি নয় বরং রাজনীতি কে রাজনীতি হিসেবেই করতে চান। তিনি আরো জানান যে তিনি মানুষের জন্য, বেকার যুবকদের জন্য কাজ করতে চান, সমাজের জন্য কাজ করতে চান,আর রাজনীতি ছাড়া অন্য কোন পথে সকলের জন্য কাজ করা সম্ভব নয়।

সূত্রে জানা গেছে তিনি সবকিছু সহ্য করেও বিজেপি ত্যাগ করার কথা কোনদিন ভাবেননি কিন্তু ইদানিং বিজেপিতে যেভাবে গন্ডগোল চলছে তাতে তিনি ক্ষিপ্ত। আরও জানা গেছে জেলে জেলে থাকাকালীন সজলকে জেল বেরিয়ে আসার পর জেলা সভাপতি ও রাজ্য কমিটির সদস্য করার কথা ছিল কিন্তু জেল থেকে বেরোনোর পর তার সাংগঠনিক দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও তাকে উপযুক্ত জায়গা দেওয়া হয়নি। পরে তাকে কিষান মোর্চার সভাপতি করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এবারেও সাংগঠনিক নির্বাচনের সময় তাকে জায়গা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল কিন্তু এবারও তাকে সেই একইভাবে বঞ্চিত করা হয়।

পার্টির অন্তর্কলহ ও কথা দিয়েও তাকে যোগ্য পদ না দেওয়ায় , ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি দল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে তিনি বিধানসভার চলাকালীন তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব সাথে দেখা করে আসেন।

সজল দে-র কাছে এই ব্যাপারে সরাসরি জানতে চাইলে তিনি ব্যাপারটি এড়িয়ে যান। তবে তিনি জানান সময় এলে সব কিছু পরিষ্কার বুঝতে পারবেন, অপেক্ষা করুন, এমন কিচ্ছু হলেতো জানতেই পারবেন।