অবতক খবর,১৭ অক্টোবর,ডায়মন্ড হারবার: ডায়মন্ড হারবারে হুগলি নদী থেকে ভেসেল থেকে নামার সময় বিপত্তি। নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়ে গেল ২ শিশু। নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধারের জন্য ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশের পক্ষ থেকে হুগলি নদীতে নামানো হয়েছে স্পিডবোট ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনার ডায়মন্ড হারবার ফেরিঘাটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় পার্ক সার্কাসের তপসিয়ার বাসিন্দা রাজা আলি ও তার পরিবার রবিবার ছুটি কাটাতে ডায়মন্ড হারবারে আসে। ডায়মন্ড হারবার ফেরিঘাট থেকে ভেসেল করে কুকড়াহাটিতে গিয়েছিল। কুকড়াহাটি থেকে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে পরিবারের ৬ সদস্যরা ডায়মন্ড হারবারে ফিরে আসছিল ভেসেল করে। ডায়মন্ড হারবার ফেরিঘাটের কাছে ভেসেল থামার পর তড়িঘড়ি ভেসেল থেকে নামার সময় ২ শিশু হুগলি নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। নিখোঁজ শিশুর নাম আতিফা পারভীন (৬) ও সিতারা নাজ (৮)।

হুগলি নদীতে পড়ে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা আর্তনাদ শুরু শুরু করে দেয়। পরিবারের চিৎকার শুনে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আছে সহকারী যাত্রীরা। পাশাপাশি খবর দেয়া হয় ডায়মন্ড হারবার থানাতে। ঘটনাস্থলে তড়িঘরিয়েছে ডায়মন্ডহারবার থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়, ডায়মন্ড হারবার পৌরসভার কাউন্সিলর বৃন্দরা। নিখোঁজ শিশুর খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। হুগলি নদীতে নামানো হয় স্পিডবোট।

ডায়মন্ড হারবার ফেরিঘাটে এসে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে হুগলি নদীতে তল্লাশি অভিযান চালানো হলেও এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি নিখোঁজ দুই শিশুকে।

ওই শিশু দুটির বাড়ি ছত্তীসগড়ে। একজনের নাম আতিফা(৮) এবং অন্যজন সিত্রাহা(৫)। পরিবারের সঙ্গে কলকাতার তোপসিয়ায় এক আত্মীয়র বাড়িতে তারা বেড়াতে এসেছিল। সেখান থেকে মা-বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গে ডায়মন্ডহারবার ঘুরতে আসে। রবিবার সকালে ডায়মন্ডহারবার ফেরি ঘাট থেকে লঞ্চ চড়ে পরিবারটি শিশুদের নিয়ে কুমড়োহাটিতে যায় বিকেল চারটে নাগাদ। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ কাটিয়ে সন্ধে সাতটা নাগাদ ভেসেলে চড়ে ডায়মন্ডহারবার ফেরে।শিশু দুটির পরিবার সূত্রে খবর, ফেরিঘাটে একটি খালি ভেসেল দাঁড়িয়ে ছিল। যে ভেসেলটি চড়ে তাঁরা কুমড়োহাটি থেকে ফিরছিলেন সেটি এসে ওই ভেসেলের গায়ে এসে থামে। সাধারণভাবে দুটি ভেসেলে যাতে জোরাল ধাক্কা না লাগে তার জন্য দুটি ভেসেলের মধ্যে টায়ার দেওয়া থাকে। স্বভাবতই তাতে একটি ফাঁক তৈরি হয়। এদিন কুমড়োহাটি থেকে ভেসেলটি ফেরি ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা ভেসে এসে ঠেকার পর সবাই নামতে যায়। শিশু হওয়ায়  লম্বা পা ফেলতে পারেনি এক শিশু। দুটি ভেসেলের সে মধ্যে গলে যায়। তাকে ধরতে দিয়ে পড়ে যায় তার ৮ বছরের দিদিও। এক নিমেষে পরিবারের লোকজনের সামনেই নদীতে তলিয়ে যায় ২ শিশু। ঘটনার পরই জোরদার তল্লাশি শুরু করে দেয় বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ডায়মন্ডহারবার পৌরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, থেকে আরম্ভ করে অন্যান্য কাউন্সিলররা। ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের লোকজন এখনও নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছেন। নামানো হয়েছে স্পিডবোট। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ওই শিশু দুটির মা ও সঙ্গে থাকা তার আত্মীয় পরিজনেরা।