অবতক খবর,৫ আগস্ট:টোল ফ্রি নাম্বারে ফোন করে নিজের বিয়ে নিজেই রুখলো নাবালিকা ছাত্রী। নাবালিকার সাহসিকতা দেখে মুগ্ধ সুন্দরবনবাসী।

বছর ১৫-র নবম শ্রেণীর ছাত্রীর সঙ্গে একই গ্রামের বাসিন্দা বছর ১৯-এর যুবক মৃত্যুঞ্জয় মৃধার সঙ্গে বিবাহ ঠিক করেছিল নাবালিকা ছাত্রীর বাবা সুব্রত মন্ডল(পেশায় চাষী)। দুঃস্থ পরিবার হওয়ায় কন্যাকে বিয়ে দিয়ে দায় মুক্ত হতে চেয়েছিলেন সুব্রত বাবু।

কিন্তু এই বিয়ে আইনত অপরাধ এইটা জানতেন না ছাত্রীর মা অনিমা মন্ডল। এমনকি নাবালিকা ছাত্রী বিয়েতে রাজি ছিল না। সহপাঠীদের সাহায্য নিয়ে হিঙ্গলগঞ্জ থানায় টোল-ফ্রী নম্বরে ফোন করে নিজেই নিজের বিয়ে রুখলো ঐ নাবালিকা।

ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট মহাকুমার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ থানা সাহেব খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউলী পুকুরিয়া গ্রামের ঘটনা।

করোনা ও লকডাউনের জন্য তেমন আয়োজন ছিল না। কোনমতে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। বুধবার সন্ধ্যাবেলা হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ের সমস্ত রকম আয়োজন চলছিল। শুধু বর আসতে বাকি ছিল। সেই সময় হাসনাবাদ কেয়া চাইল্ড লাইনের সদস্য শফিকুল ইসলাম ও শাকিলা খাতুনরা হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ যৌথভাবে পুকুরিয়া গ্রামে হাজির হন। তখন বিয়ের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। তারপর নাবালিকার বিয়ে দেওয়া আইনত অপরাধ ছাত্রীর পরিবারকে বোঝান প্রশাসনের কর্তারা এবং ছাত্রী যাতে পড়াশোনা করতে পারে আগামী দিনে তার সবরকম ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। পড়াশুনা করার জন্য সব রকম ভাবে আশ্বাস দেন।

তার পাশাপাশি বিয়ে বাড়িতে পুলিশ আসতেই, ঐ যুবক জানতে পেরে বিয়ে বাড়িতে ঢোকার আগেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়।ঐ যুবকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ।

ছাত্রীর মা অনিমা মন্ডল ও বাবা সুব্রত মন্ডল, পুলিশের কাছে মুচলেখা দেন। যতক্ষণ পর্যন্ত এই ছাত্রীর ১৮ বছর বয়স না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা বিবাহ দেবেন না বলে জানিয়েছেন। ঐ নাবালিকার পড়াশুনা করার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দেন প্রসাশন।

নাবালিকার সাহসিকতা দেখে সুন্দরবনের মানুষের কাছে আগামী দিনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বলে মনে করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ছাত্রীর এই ধরনের প্রতিবাদ সহপাঠীদের আগামী দিনের শিক্ষার আলোয় পথ চলা অনেকটা উদ্বুদ্ধ করবে বলে মনে করছেন সুন্দরবনের মানুষ।