অবতক খবর,৬ জানুয়ারিঃ কে না জানতো, সকলেই জানতো। রাত্রি নামছে— অন্ধকার ক্রমাগত ঘন থেকে ঘনতর ঘনতম হয়ে যায়,ভারতীয় উপমহাদেশ, এই উপকূল উপত্যকায়। যখন ফ্যাসিবাদ নেমে এসেছিল তখন মুখোশে ঢাকা ছিল ওদের মুখও। ক্রমশ স্পর্ধা বেড়েছে, সাহস দেখিয়ে মুখোশ খুলে সরাসরি আক্রমণ নেমে এসেছে। যারা ছিল ব্রাউন তারা এখন ক্রমশ হতেছে গেরুয়া। এখানেও শুরু হয়েছে মুখোশ ঢেকে আক্রমণ। এরপর সরাসরি নেমে আসবে আঘাত‌। লাঠি ইট পাথর দিয়ে যে আক্রমণের সূচনা,নিশ্চিত সেই আক্রমণ চলে যাবে আগ্নেয়াস্ত্রের দিকে।

কারা করেছে এই আক্রমণ রাত্রির অন্ধকারে? গেরুয়া শিবিরের ছাত্রসংগঠন এবিভিপি যে এই আক্রমণ চালিয়েছে এটা আর কারোর জানতে বাকি নেই। জেএনইউ ক্যাম্পাসে আক্রমণ নেমে এসেছে। ‌ নেমে এসেছে সবরমতী সহ বিভিন্ন হোস্টেলে। পুলিশ প্রশাসন নিষ্ক্রিয়। ১৯ জন আহতকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। দুজনের অবস্থা গুরুতর আশঙ্কাজনক। চরম আক্রান্ত হয়েছেন ছাত্র সভানেত্রী ঐশী ঘোষ। আক্রান্ত হয়েছেন শিক্ষাজীবী মানুষ অধ্যাপিকা সুচরিতা সেন।

তৈরি থাকতে হবে এখন। কত জোরে ছোটা যায় তার জন্য রীতিমতো শরীরচর্চা করতে হবে। কারণ ওরা সঙ্ঘবদ্ধ হামলা চালাবে। ওদের দলের পেছনেই সংঘ শব্দটি লাগানো আছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। রাষ্ট্রকে স্বয়ং এভাবেই এরা সেবা করে যাবে। অন্ধকারের ভেতর লাঠি নিয়ে তাড়া করবে। হিংস্র বাঘের তাড়ায় আমাদের হরিণের গতির তীব্রতায় ছুটতে হবে।ছোটা প্র্যাকটিস করুন। ছুট! ছুট! ছুট ! কতদূর ছুটতে পারবে তোমরা, ছুটতে পারব আমরা। শেষ পর্যন্ত তো দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাবে? প্রশ্ন, কেন এই সংঘবদ্ধ হামলা? দেশকে সাম্প্রদায়িকতার বিভাজনে, দেশকে ধর্মীয় ভিত্তিতে ভাগ রুখে দিতেই হবে। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য ভারতের ঐতিহ্য। এটা বজায় রাখতেই হবে। ‌এই ঐক্যবদ্ধ ও সংহতির বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছে ওরা। সেইজন্যই আক্রমণ। তাহলে কি এই সংঘবদ্ধ হামলা চলতেই থাকবে? তা কি পারে? তা পারে না। পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকবে আপনি নিশ্চিত থাকুন।

দেশের নিয়ন্ত্রণ ফ্যাসিস্টদের হাতে চলে যাবে, এটা কি হতে পারে? হিন্দুত্ব! হিন্দুত্ব! হিন্দুত্ব! এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে ছাত্রসমাজ। এ লড়াই চলবে। শোনা গেছে সেই বিপন্ন বিস্ময়কর উচ্চারণ। ‌ পুলিশ সামনে দাঁড়িয়ে আছে, গুন্ডারা বলে চলেছে রীতিমতো হুমকি দিয়ে, “দেশ কি গদ্দারো কো,গোলি মারো শালো কো।’

জেএনইউ-তে আন্দোলন চলছে ৭০ দিন ধরে। এই আন্দোলনকে আরও উচ্চস্তরে নিয়ে যেতে হবে। রুখতে হবে এই নয়া ফ্যাসিবাদকে। মুখোশ ঢাকার দিন এসে গেছে। মুখোশ টেনেখোলার দিন এসে গেল, দ্রুত প্রস্তুতি নিতে হবে।