রাজীব মুখার্জী :: অবতক খবর :: হাওড়া ::    জলের অপর নাম জীবন। কিন্তু এই জলেই কার্যত নাভিশ্বাস উঠছে হাওড়ার পাঁচলা এলাকার বিকির বাসিন্দাদের। সেই জলে কার্যত ডুবতে বসেছে তাদের জীবন। চারিদিকে জল থৈ থৈ রাস্তা। ডুবে আছে বাড়ির উঠোন। খাট থেকে মাটিতে নামলেই পা ডুবছে জলে। এটাই স্বাভাবিক চিত্র পাঁচলার বিকি হাকোলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিকি তে।

প্রায় দুই মাস অতিক্রান্ত হতে চলল আমফান ঘূর্ণি ঝড়ের। এখনো জলমগ্ন গোটা এলাকা। যার জেরে এলাকায় জ্বর,সর্দি-কাশি লেগেই আছে। কারো হাতে ধরেছে চর্মরোগ। এলাকার বাচ্চাদের পেটের অসুখ দেখা দিয়েছে। বড়রাও বাদ নেই এর থেকে। দীর্ঘদিনের জমে থাকা জল থেকে আশঙ্কা বাড়ছে ডেঙ্গির। এলাকায় রয়েছে পানীয় জলেরও সমস্যা। তার পাশাপাশি রান্নার ঘর বসতবাড়ির ভিতরে এমনকি বাথরুমেও জমে আছে জল। যার ফলে রোজকার জীবন যাপনে চরম দুর্ভোগে এলাকার মানুষ। এই সংকটময় পরিস্থিতির জন্য বেশ কিছু মানুষ ঘর ছেড়ে অন্যত্র রয়েছেন।

এলাকার বাসিন্দা অভিযোগ করেন সেই আমফান ঝড়ের পর থেকে এলাকায় জল জমে আছে এভাবে। তারা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। তাই এই জল ঠেঙিয়েই কাজ করতে হয়। জমে থাকা জল থেকে বারবার অসুস্থ্য হলে চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাবেন না নিজেদের পেটে খাবার দেবেন সেটাই এখন বুঝে উঠতে পারছেন না। বিডিও, পঞ্চায়েতে বারবার দরবার করলেও প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জোটে নি। সকলেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। কবে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে তার কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় নি বলেই দাবি করেন তিনি।

অপরদিকে শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্যা মঙ্গলা পালুই কার্যত স্বীকার করে নেন যে পঞ্চায়েত এই সমস্যার সমাধানে অপারগ। তিনি আরো দাবি করেন পঞ্চায়েত, বিডিও অফিসে তিনি বারংবার জানিয়েছেন। কিন্তু সেখান থেকে কোনো দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ করেন ওই সদস্যা। তিনি আরো বলেন প্রশাসন যদি ঠিক মতো কাজ করতো তাহলে এই সমস্যার সমাধান হইয়ে যেত। তিনি স্পষ্ট আঙ্গুল তোলেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী বাবলু পুলটাইয়ের বিরুদ্ধে। তার দাবি সে জানিয়েছে তাদের পাড়া ভালো নয় তাই এভাবেই জলমগ্ন হয়ে থাকবে।

এই ঘটিনায় স্থানীয় বিজেপি শাসক দলকে একহাত নেন। ঘোষ পাড়ার স্থানীয় বিজেপি নেতা জানান সেই ২০১৪ সাল থেকে এই এলাকা প্রতিবছর বৃষ্টিতে জলমগ্ন থাকে। এলাকার বিডিও, গ্রাম পঞ্চায়েতে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয় নি। প্রায় ১০০০ টি পরিবার এভাবেই তাদের জীবন কাটায় জলের মধ্যেই। তিনি অভিযোগ করেন যেহেতু এই কাজে পঞ্চায়েত প্রধানের কাটমানি নেই তাই তিনি দায়িত্ব নিচ্ছেন না। তিনি আরো দাবি করেন আগামী সোমবার বিজেপির পক্ষ থেকে স্থানীয় বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দেওয়া হবে।