অবতক খবর,৩০ সেপ্টেম্বর: কাঁচরাপাড়ার কেন্দ্রীয় অঞ্চল গান্ধী মোড়। সেখানে গতকাল থেকেই প্রচুর পরিমাণে জল অপচয় হচ্ছে। ওই অঞ্চলে একটি পাইপ ফেটে গোটা অঞ্চল জলমগ্ন। গান্ধী মোড় অঞ্চলটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল, শহরের প্রাণকেন্দ্র বলা হয় স্থানটিকে। পুজোর আর হাতে গোনা কয়েক দিন বাকি। শহরের মানুষ তো বটেই, বাইরে থেকে শপিং করতে আসছেন প্রচুর মানুষ। কার্যত পা ফেলার জায়গা নেই শহরের এই প্রাণকেন্দ্রে। পাইপ ফেটে অঞ্চলটি জলমগ্ন হওয়ার ফলে ভুক্তভোগী পথচারী থেকে শুরু করে সেখানকার ব্যবসায়ীরা। ‌ ফুটপাতের ব্যবসায়ী কিংবা ফুটপাতে যারা হাঁটাচলা করছেন, সেখান দিয়ে একটি বাইক গেলেও জল ছিঁটে তাদের গায়ে চলে আসছে। ‌ দুদিন এই পরিস্থিতি থাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়ছে মানুষ।

রাতের অন্ধকারে কারা ওই অঞ্চল গর্ত করে পাইপ ফাটিয়ে দিয়ে গেল তা পরিষ্কার নয় কারোর কাছে।
কাঁচরাপাড়া পৌরসভার মুখ্য প্রশাসক সুদামা রায় বলছেন, পুজো কমিটির তোড়নের জন্য ওই গেটের গর্ত খুঁড়তে গিয়ে পাইপটি ফেটেছে।


কিন্তু অবতক-এর পক্ষ থেকে তদন্ত করে দেখা গেল যে, এখানে ওই পুজো কমিটির কোনো দোষ নেই। দেখা যাচ্ছে সেখানে একটি ৭-৮ ফুট গভীর গর্ত করা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে জেসিবি মেশিন দিয়ে গর্ত করে সেখানে লোহার একটি ফ্রেম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ‌ তবে ওই লোহার ফ্রেমটি কি কাজে ব্যবহৃত হবে তা কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারছে না। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেখানে বিজ্ঞাপনের জন্য একটি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হবে। ‌


এখন প্রশ্ন, রাস্তার উপরে এইরকম ল্যাম্পপোস্ট কি লাগানো যেতে পারে? কারণ এই রাস্তাটি এমনিতেই অত্যন্ত সরু। পথচারী,যানবাহন চলাচল করতে যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে এই পরিস্থিতিতে এই রকম একটি ল্যাম্পপোস্ট বসানোর অনুমতি দিল কারা? কারণ যদি মুখ্য প্রশাসক এই অনুমতি দিয়ে থাকেন তবে তাঁর জানা থাকত। তিনি প্রকাশ্যে অবতকের ক্যামেরার সামনে বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

তবে কে দিল এই অনুমতি? নাকি গোপনে কোন লেনদেন হয়েছে এই ল্যাম্পপোস্ট বসানোর জন্য?
এই প্রশ্ন তো উঠছেই, পাশাপাশি যারা এই কাজ করেছে তারা রাতের অন্ধকারে চুপিসারে কাজ করে জলের পাইপটি পর্যন্ত ফাটিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে।

মুখ্য প্রশাসক সুদামা রায় এই বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করবেন এবং দোষীরা যাতে যথোপযুক্ত শাস্তি পায় সে বিষয়টির দিকে তিনি নজর দেবেন। ‌
সেই কারণে তিনি ছবি তুলে থানা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। এর পরবর্তীতে তারা কি করবেন সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। ‌

অন্যদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই নিয়ে একটা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পুজোর মরশুমে এইরকম কাজ করা মোটেও উচিত হয়নি বলে তারা বলছেন।
এই নিয়ে ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই নাজেহাল করার একটা চক্রান্ত চলছে।
এমনিতেই করোনাকালে ব্যবসার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। তারা চেয়ে ছিলেন এই পুজোর বেচাকেনার দিকে। কিন্তু এই রকম পরিস্থিতিতে ক্রেতারাও গান্ধীমোড়মুখী হতে বিরক্তি প্রকাশ করছেন, যার ফলে মার খাচ্ছে তাদের ব্যবসা।