অবতক খবর, মালদা: জমি জবর দখল করে বাংলা গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায়। ঘটনাটি হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার হলদিবাড়ি গ্রামে । হলদিবাড়ি থেকে ইশাদ পুর পর্যন্ত বাংলা গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে। রাস্তাটি হলদিবাড়ি গ্রামের ভেতর দিয়ে গিয়ে সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপর দিয়ে ইসাদ পুরের দিকে যাচ্ছে। রাস্তার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ কিলোমিটার।

হলদি বাড়ির বাসিন্দা কার্তিক দাসের অভিযোগ, এই রাস্তা নির্মাণের জন্য তার চার কাঠা জমি নিয়ে নেওয়া হয়েছে । ওই জমির উপর মাটি ফেলা শুরু হয়, তার জন্য কোন সরকারি নির্দেশিকা ও পাননি, পাননি কোনো ক্ষতিপূরণ। উপরন্তু এর প্রতিবাদ করতে গেলে ঠিকাদার লোকজন নিয়ে তাকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বলছে অভিযোগ করে কোন কিছু হবে না। তিনি একটি দোকানে দিনমজুর কাজ করে সংসার নির্বাহ করেন। তার আর কোনো জমি নেই। এই চার কাঠা জমির উপর চাষবাস করে তার সংসার চলে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি স্থানীয় ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক, ভূমি সংস্কার আধিকারিক থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর নিকট আবেদন জানিয়েছেন। এই জমির জন্য তাকে যেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কারণ এই জমিটা তার রুটি-রুজি। জমির সমস্ত কাগজ তার কাছে রয়েছে। বংশানুক্রমে এই জমিনে ভোগ করে আসছেন। এই জমির উপর তার সংসার নির্ভর করে। প্রশাসন এর কোন ব্যবস্থা না নিলে তাকে এবং তার পরিবারকে না খেয়ে মরতে হবে।

একইভাবে ক্ষোভ ফুটে উঠল কার্তিক বাবু স্ত্রীর মুখে। তিনি জানান, জমিতে যখন মাটি ফেলা হচ্ছিল তখন তিনি ঠিকাদারের লোকজনকে বারণ করেছিলেন, তারা শোনেনি। তাই এখন তার দাবি, জমিটা তাদের ফেরত দেওয়া হোক, নচেৎ জমির পরিবর্তে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। জমি বা ক্ষতিপূরণ কিছুই না পেলে তারা সন্তান নিয়ে পথে বসবেন। হলদিবাড়ির স্থানীয় বাসিন্দা অনিল দাস জানিয়েছেন,  হলদিবাড়ি অনেকের জমি রাস্তা নির্মাণে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে কার্তিক দাসের জমিও আছে। পরিবারটি অত্যন্ত গরীব। প্রশাসনের উচিত তার জমির পরিবর্তে কার্তিক বাবুকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া। নাহলে অসহায় পরিবারটি একদমই শেষ হয়ে যাবে।

স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য লতি চাঁদ দাস জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বাংলা গ্রামীণ সড়ক যোজনা মাধ্যমে একটি পাকা রাস্তা এখানে তৈরি হচ্ছে। এ রাস্তাটি হলদিবাড়ি থেকে শুরু হয়ে ইসাবপুর এর দিকে চলে যাবে। রাস্তা নির্মাণ হলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। কার্তিক দাস এর জমির ব্যাপারে একটা গন্ডগোল হয়েছে তিনি শুনেছেন। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। যদি কোন সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে তাহলে তিনি প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাবেন সমস্যাটি সমাধান করার জন্য।

স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যা মমতাজ বেগম জানালেন, কোনো ব্যক্তির জমি জবর দখল করে রাস্তা নির্মাণ কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়| রাজ্যের  মুখ্যমন্ত্রী ও চান না গরিব মানুষের স্বার্থ নষ্ট হোক। তাছাড়াও তিনি এও জানান, গ্রামীণ এলাকায় রাস্তা তৈরি হোক তিনি ও চান, কিন্তু কোনো জমি জবর দখল করে নয় | আগামী মাসে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে আসবেন সেখানে তিনি সমস্যাটি তুলে ধরবেন |এই প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ভূমি সংস্কার আধিকারিক ক্যামেরার সামনে কোনো মন্তব্য করতে চান নি | হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এই প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে চান নি |