এখন দেশের গায়ে দেশপ্রেমের জ্বর! আমিও কিন্তু কাঁপছি, তাপমাত্রায় নয়, ভয়ে থরথর। থার্মোমিটারে ধরা যাবে কি আমার সেই জ্বর? আমার কপালে জলপটি দেবে খুঁজে পাই কোথায় সেই হাত? যাকে পাশে পাবো ভেবেছিলাম সেও থুতু ছিটিয়ে চলে গেল এমনি বরাত? আমার গান অথবা কান্না শুনুন

চিনার গাছের গান
তমাল সাহা

ছটি কবিতা

এক)
থমথমে শুনশান দুরুদুরু শব্দগুলি
লেখা ছিল বইয়ের পাতায়।
ভয় পেয়ে ওরা এখন ছড়িয়ে পড়েছে
উত্তর-পূর্ব উপত্যকায়।

দুই)
সূর্য ওঠারও আগে ছেলেটি এসেছিল জানালার কাছে।
গুলির শব্দ হল—
জানালার কাছে ছুটে গেল শবনম।
মুখ থুবড়ে পড়ে কে? ঋতম!

তিন)
চিনার,চেরি,জাফরান,উইলো,পাইন —
সবই আছে, তবে স্তব্ধ।
আরণ্যক বাতাস শুধু ছড়িয়ে দেয়
ভারি বুটের শব্দ।

চার)
রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে পুলকার।
স্কুল বন্ধ রেখেছে সরকার।
ব্ল্যাকবোর্ড ডাস্টার মেখে আছে ধুলো।
তবুও শিশুটি শিখে গেল তিনটি শব্দ—
কারফু,ব্ল্যাকআউট, মেশিন গান।
মা বললো, অস্ত্র হাতে ওরা দেশের নওজয়ান!

পাঁচ)
সংযোগমূলক পরিষেবা তো জীবনের জরুরি অধ্যায়।
তা কি কখনও বিচ্ছিন্ন-অচল রাখা যায়?
সুদূরে পড়ে আছে প্রেমিক ও পড়ুয়া।
কি করে তবে ওরা
প্রেমিকা ও মায়ের সন্ধান পায়?
মুক্ত দেশে আছি আমরা!
ফিসফিস কত কথা ভেসে যায়
অদৃশ্য হাওয়ায়

কেউ কি জানে
হাওয়া এখানে ছদ্মবেশী গুপ্তচর
গোপনে সংবাদ পাঠায় চরাচর!

ছয়)
সুরেরই আছে শুধু সাহসী উচ্চারণ।
ওই দেখো!পরমা প্রকৃতি
সুরকে হাত তুলে জানায় অভিনন্দন।
রাষ্ট্রীয় শব্দ তো বিপুল বিক্রমে ভয় দেখায়!

আজ হ্রদের তীরে এক অপূর্ব জলসায়—
গজল,শায়েরি,সন্তুর একসাথে বেজে যায়।

সুরকার খুন হতে পারে
সুরের মৃত্যু নেই,বাতাস জানায়…

Disclaimer: এ লেখা দেশকে ভালোবেসে লেখা। কেউ কোনোভাবে মনঃক্ষুন্ন হলে কবি ক্ষমা চাইছে।