অবতক খবর,৮ সেপ্টেম্বর,রুপম রায়/অঞ্জন শকুল,নদীয়া: নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া স্টেশনে গিরিধর বিশ্বাসের ব্যতিক্রমী চায়ের দোকান।
এই চায়ের দোকানে চা খেতে আসলে অনেক অজানা তথ্য জানা যাবে। যেমন স্বাধীন
ভারতবর্ষে 1947 সাল থেকে 2021 পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধান মন্ত্রী ও রেল মন্ত্রীদের কার্য কালের সময় ও নাম পাওয়া যাবে। তেমনি পাওয়া যায় কুইজ প্রতিযোগিতা। একথা শুনে অবাক হলেন তো ?

অবশ্য অবাক হওয়ারই কথা। বাস্তবে চায়ের দোকানটা যেনো রাজনৈতিক ডিক্সনারি। সাধারণত আমরা চায়ের দোকানে সিনেমার পোস্টার, অশ্লীল ছবি দেখে অভ্যস্ত।
সেখানে গিরিবাবু ব্যাতিক্রমী,অন্য মানসিকতার মানুষ।

তিনি বলেন, অনেক ছাত্র-ছাত্রী,চাকরিজীবি, শিক্ষক,এছাড়াও সব ধরণের মানুষ আসেন আমার চায়ের দোকানে।
যারা আসেন তারা এই ছোট্ট দোকান থেকে কিছুনা কিছু শিক্ষা নিয়েই যান।সবাই এই কাজের ভুয়সী প্রশংসা করেন।
এখন প্রশ্ন, কে এই গিরিবাবু? গ্রামের বাড়িতে মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবারে বাস। হঠাৎ একদিন ডাকাতি হয়ে গেল বাড়িতে। প্রচন্ড মারধোর করে ডাকাতদল। সর্বস্ব নিয়ে যায় ডাকাতরা।
ফলে মারাত্মক যখম অবস্থায় ভর্তি হন কলকাতার নীলরতন মেডিকেল হসপিটালে। ডাকাতির ফলে পরিবার হয়ে যায় নিঃস্ব। আর ছোট বেলা থেকেই গিরি বাবুর চায়ের নেশা ছিল। এইঅসুস্থ অবস্থায় কলকাতায় পয়সার অভাবে এক দিন কোন দোকানদার চা দেয়নি।
সেই দিনের সেই ঘটনার পর আমি মনেমনে প্রতিজ্ঞা করি আমি সুস্থ হয়ে একটা আদর্শ চায়ের দোকান করব।আজ আমার চায়ের দোকান ২৩ বছরে পড়ল। যেসমস্ত গরিব ও অসহায় মানুষ পয়সার অভাবে চা কিনতে পারে না তাদেরকে আমি বিনাপয়সায় চা খাওয়াই।

আজ মাজদিয়া স্টেশন আলোকিত করে রয়েছে গিরি বাবুর চায়ের দোকান। এমনকি করোনা আবহে যখন চায়ের দোকান বন্ধ ছিল তখনও গিরি বাবু বাড়ি থেকে চা নিয়ে এসে অসহায় মানুষদের খাইয়েছেন।
নিজের জীবনের সেই কথা ভেবে,আর কথা বলতে গিয়ে চোখ বেয়ে পড়ে জল।
আজ সেদিনের চা খেতে না পাওয়া গিরি বাবু তার দোকানে সারা ভারতকে হাজির করেছেন।

তাইতো ছাত্র ছাত্রীরা ভারত চায়ের দোকান দেখতে উৎসুক হয়ে খাতায় নোট করে নিয়ে যায় ,যা ওদের কাজে লাগে।

গিরিবাবু বলেন,
অনেক কষ্ট করে মনীষীদের ও মন্ত্রীদের ছবি আমার চায়ের দোকানে লাগাতে পেরে আমি মানসিক ভাবে খুশি।
গিরি বাবুর এই উদ্যোগকে সকলেই স্বাগত জানান। আমরাও গিরি বাবুর এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাই।