অবতক খবর,২৬ মে: আজ রাত ৯টা নাগাদ কাঁচরাপাড়া শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বসবাসকারী জয়দেব গুঁই প্রয়াত হলেন। তিনি কাঁচরাপাড়া অঞ্চলের একজন সুপরিচিত মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন গভর্নমেন্ট কন্ট্রাক্টর। ক্ষুদ্র সেচ বিভাগের সমস্ত ঠিকেদারিত্ব একসময়ে তিনি দেখভাল করতেন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় ৬০-এর দশকের প্রথম ভাগ থেকে এই অঞ্চলে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। দুঃস্থ মানুষ তাঁর কাছে এলে তিনি তাঁকে শুধু আর্থিক নয় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতেন। তিনি বিভিন্ন ব্র্যান্ডেড কোম্পানির জলের পাম্পের ডিলার ছিলেন এবং পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

একবার শ্রীলক্ষ্মীসিনেমা সংলগ্ন অঞ্চল থেকে তাঁর লরি বোঝাই মাল ডাকাতি হয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি এই ব্যবসা বন্ধ করে দেন।

আরেকটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার, কাঁচরাপাড়া অঞ্চলে ৬০-এর দশকে দেওয়ালি উৎসবের জন্য কাঁচরাপাড়া অঞ্চলের তিনটি ক্লাব সংগঠন উদয়ন সংঘ,অশোক সংঘ,ভারত সংঘ এই জেলার মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। প্রায় সপ্তাহ ব্যাপী এই দীপাবলি উৎসব অর্থাৎ শ্যামা পুজোকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলে একটা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে উঠেছিল।

তিনি ছিলেন শ্রীলক্ষ্মী সিনেমার বিপরীতে অশোক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন এবং কবিগুরু রবীন্দ্র পথ সংলগ্ন ওই অঞ্চলেই শ্যামা পুজো অনুষ্ঠিত হত। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,তখন যাকে জলসা বলা হতো সেটা অনুষ্ঠিত হতো। এই অনুষ্ঠানে যোগেশ দত্তের মূকাভিনয়, সুবীর সেন,প্রতিমা মুখোপাধ্যায়, পান্নালাল ভট্টাচার্য,ভি বালসারা ও তার সম্প্রদায়–

আরো উল্লেখযোগ্য সংগীতশিল্পীরা অনুষ্ঠান করে গিয়েছেন। এই ক্লাব সংগঠনটির মূল দায়িত্বে ছিলেন অরুণ দে, জয়দেব গুঁই ছিলেন এই ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ।

কাঁচরাপাড়া 15 নম্বর ওয়ার্ডের অধিবাসী ছিলেন তিনি। এই ওয়ার্ডে অগ্রগামী সংঘ যে শারদ উৎসবের সূচনা করে তার পুরো ভাগে ছিলেন জয়দেব গুঁই। তাঁর উৎসাহে এবং আশ্বাসে এই ক্লাবের সদস্যরা এই ওয়ার্ডে শারদ উৎসবের প্রচলন করেছিলেন।

এমন একজন ব্যক্তিত্ব সুপরিচিত মানুষ আজ চলে গেলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী দুই পুত্র তিন কন্যা রেখে গিয়েছেন। তাঁর প্রকৃত নাম বিজয় কুমার গুঁই হলেও তিনি জয়দেব গুঁই নামেই এই অঞ্চলে পরিচিত ছিলেন।