অবতক খবর,২৫ জুনঃ বীজপুরে এখন শুরু হয়ে গেছে অর্জুন সিং-এর আনাগোনা। কোথাও মধ্যাহ্নভোজ করে তিনি সংগঠন তৈরি করছেন,আবার কোথাও রাতে নৈশভোজে সংগঠন মজবুত কিভাবে করতে হবে বা আগামী দিনে কিভাবে এগোতে হবে সেই বিষয়ে আলোচনা করছেন। ‌ এই সময়ে রাজনীতির সংজ্ঞা এখন পাল্টে যাচ্ছে। যেই এক সময়ে বীজপুরে আসতে দ্বিধাবোধ করতেন সেই অর্জুনই এখন বীজপুরে নির্দ্বিধায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ‌

হুকুম চাঁদ জুট মিল নিয়ে একটা চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি বেশ কয়েকদিন ধরেই সৃষ্টি হয়েছে। দেখা গেল সাংসদ অর্জুন সিং শ্রমিকদের সাথে আলাপ আলোচনার কারণে জুটমিলে এলেন। তাঁর শ্রমিকদেরকে বোঝাতে দেখা গেল আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি তথা জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম, হালিশহর পৌরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি, কাঁচরাপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারীকে। তারা সকলেই শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন ও কাজে সকল শ্রমিকদের ফিরে আসতে আহ্বান জানান।

অন্যদিকে আজ রাত নটা নাগাদ তিনি একজন সাধারন কর্মীর বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। তিনি একজন বিজেপি র সাধারণ কর্মী। তবে বিগত দিনে তার বাড়িতে ভাঙচুর থেকে শুরু করে তাকে মারধর সবই হয়েছিল। সেই কারণে বেশ চর্চাতেই ছিলেন এই যুবক। তিনি আর কেউ নন হালিশহর ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অরিন্দম দে।

এই অরিন্দম দে বর্তমানের বিজেপি নেতা রাজা দত্তর বাড়িতে এক সময়ে দিনরাত থাকতেন। তাঁর সবচেয়ে কাছের মানুষ ছিলেন অরিন্দম বাবু। আর আজ তারই বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন সাংসদ।

আর এই খবর পাওয়া মাত্রই সেখানে চলে আসেন হুকুম চাঁদ জুট মিলের শ্রমিকরাও। শুধু তাই নয়, সেখানে ছুটে আসেন কিছু বিজেপি নেতাও।

আর অর্জুন সিং অঞ্চলে ঢোকার পরেই মুখে মুখে খবর পেয়ে যান বিভিন্ন তৃণমূল নেতারা।তবে বেশকিছু তৃণমূল নেতা সেখানে গিয়ে সাংসদের সাথে সাক্ষাৎ করতে না পারলেও আমাদের অফিসে ফোন করতে শুরু করেন যে,অমুক জায়গায় অর্জুন সিং এসেছেন।

তবে এখন এই রাজনীতি যে কোন দিকে মোড় নেবে তা বোঝা মুশকিল। এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, বীজপুরে একটা বড়সড় এবং শক্তিশালী লবি তৈরি হতে চলেছে তা অবশ্যই বিধায়কের পাল্টা।

অন্যদিকে একদিন আগেই সোমা দেবী(যিনি বর্তমানে বিজেপিতেই রয়েছেন)কে নিয়ে আমরা যে সংবাদ পরিবেশন করে ছিলাম,তার পরেই তাঁকে ফোন করতে শুরু করেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী এবং তৃণমূল নেতারা।

এ প্রসঙ্গে সোমা দাস নিজে জানিয়েছেন যে, সাংসদের মধ্যাহ্নভোজের পর বহু তৃণমূল নেতারা তার সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন। আর কি কারণে তারা যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন তারা সকলেই জানেন। হয়তো তারা দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বা কোন জায়গা পাচ্ছেন না, তাই আমার মারফতে তারা সামনের সারিতে আসতে চাইছেন। এক কথায় এখন বহু তৃণমূল কর্মী নেতা অর্জুন সিংহ এর পাশে আস্তে মুখিয়ে রয়েছেন তবে তাদের মধ্যে চাপা ভয়ও রয়েছে।

অনেকে এখন জল মেপে এগোতে চান।এক তৃণমূলের কাউন্সিলর জানান যে অর্জুন সিংহ আর কোনো অন্য দলের লোক নন তাই তার সঙ্গে যেতে আপত্তি কে করবে।প্রত্যেকে তার সাথে গলাগলি করছেন হাতে হাত রেখে ফটো সুট করছেন আর নিচের কর্মী নেতা তার পাশে গেলেই দোষ। আজ সাংসদ অর্জুন সিং-এর যে সক্রিয়তা দেখা গেল তাতে অনেকেই মনে করছেন যে আগামীতে দলে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় তাঁকে দেখা যাবে।