অবতক খবর,১২ সেপ্টেম্বর: ১০ সেপ্টেম্বর বিজেপি পরিচালিত ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বীজপুরের বিধায়ক পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, তিনি বিজেপিতে এসেছেন এক বিশেষ কারণে গদ্দারদের বাংলা থেকে তাড়াতে।

উল্লেখ্য তাঁর বাবা মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পর তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে স্লোগান ওঠে গদ্দার,মীরজাফর। এমনকি বর্তমানে বিজেপির যে ব্যারাকপুর সাংসদ অর্জুন সিং বিজেপিতে যাবার আগে তৃণমূলের কোন সভায় বক্তৃতা শুরু করতেন এই রায় পরিবারকে নিয়েই এবং মুকুল রায়কে সরাসরি গদ্দার বলতেন।

শুভ্রাংশু রায় সাক্ষাৎকারে বলেন যে, তাঁর পিতা বিজেপিতে যোগদানের পর তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে যে বিক্ষোভ মিছিল যায় তাতে তাঁর বাড়ির সামনে অনেক তৃণমূল কর্মী প্রকাশ্যে প্রস্রাব করে দেন এবং গদ্দার স্লোগান তুলে ওই অঞ্চলকে মাতিয়ে তোলেন। ফেসবুক লাইভে তিনি এই কথা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন। তিনি জানান,এই গদ্দারদের তাড়ানোর জন্যই তার বিজেপিতে যোগদান।

এর আগেও বিভিন্ন সভায় মুকুল রায়কে বড় গদ্দার এবং শুভ্রাংশু রায়কে ছোট গদ্দার বলে সম্বোধন করা হয়েছে। বিভিন্ন সভায় এমনও দেখা গেছে যে তৃণমূলের জেলা স্তরের নেতৃত্ব তাঁকে মঞ্চে বসিয়ে পাশে রেখে তাঁর পিতাকে বিশেষ গালাগাল করেছেন। ‌ সেই সম্পর্কে শুভ্রাংশু রায় বলেন যে, তিনি দীর্ঘদিন তাঁর পিতার প্রতি অপমানজনক মন্তব্য সহ্য করেছেন। নিরুপায় হয়েই তিনি সহ্য করেছেন। তিনি তাঁর পিতার পথই অবলম্বন করে শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

এখন তিনি আরো অভিযোগ তুলেছেন বিজেপিতে আসার পর বিধায়ক হিসেবে তিনি যে সমস্ত উন্নয়নমূলক কার্যগুলো করতে চান, তিনি উন্নয়নের খাতে যেখানে যেখানে টাকা দিয়েছিলেন সেই সব উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, তিনি এই গদ্দারদের তাড়ানোর জন্যই বিজেপিতে এসেছেন।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কোন গদ্দারদের তাড়াতে চাইছেন? তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, তিনি যাদের গদ্দার বলেছেন এবং যারা গদ্দার স্লোগান তুলেছিল তারা গোষ্ঠীর দিক থেকে তৃণমূলে তখন শুভ্রাংশু রায়ের দিকেই তো ছিল। তাহলে যারা গদ্দার বলেছিল তারা তো তাঁর হাতেই তৈরি। অন্যদিকে যে ব্যারাকপুরের বর্তমান বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং, তিনিও তো তাঁর পিতাকে গদ্দার বলেছেন এবং তাঁকেও বিভিন্ন মঞ্চে হেয় করেছেন। তাহলে কি তিনি অর্জুন সিং-কেও দল থেকে তাড়াবেন? যদি সব গদ্দার বাড়াতে চান তাহলে তো তারমধ্যে ব্যারাকপুরের সাংসদও পড়ে যাচ্ছেন!

অন্যদিকে অনেক তৃণমূল নেতা বলতে চাইছেন যে শুভ্রাংশু রায়ের বাজার এখন পড়তির দিকে। বীজপুর অঞ্চলে সে এখন নখদন্তহীন বাঘ। লাইম লাইটে আসার জন্যই তিনি এই রকম বড় বড় বাক্য ছাড়ছেন। অথচ তিনি অন্ততপক্ষে দুবার তৃণমূল নেত্রীর পায়ে গিয়ে প্রণাম করেছেন এবং বলেছেন, তিনি তাঁর মাতৃতুল্য, অভিষেক তাঁর নেতা এবং তিনি এও বলেছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর মা রান্না করে পর্যন্ত খাইয়েছেন। সুতরাং তিনিই তো তৃণমূল দলের প্রতি গদ্দারি করেছেন। মমতা ব্যানার্জীই তো তাঁকে নেতা বানিয়েছেন। তিনি এত বড় কথা বলার সাহস কোত্থেকে পাচ্ছেন? তৃণমূলকে আশ্রয় করে যদি রাজনীতিতে তাঁর উত্থান না ঘটত তাহলে তিনি আজ কোথায় থাকতেন!