গণতান্ত্রিক দংশন / তমাল সাহা

হকের চাকরির দাবিতে প্রতিবাদী পুলিশি দন্তে দংশিত অরুণিমা পালকেই জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করলো কলকাতার পুলিশ!

গণতান্ত্রিক দংশন
তমাল সাহা

তুমি যখন রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়তে তুমি জানতে চেয়েছিলে রাষ্ট্র কাকে বলে, গণতন্ত্র কি, আর বলেছিলে পুলিশ দেখেছি কিন্তু পুলিশিরাজ কাকে বলে?
আমি বলি খুব নিচু গলায় বিষয়গুলি বইতে লেখা আছে। আগে একটু বুঝে বুঝে সময় নিয়ে পড়ে নাও। তারপর তোমাকে আমি ব্যবহারিক এবং প্রয়োগিকভাবে সব বুঝিয়ে দেব, ঘুরে ঘুরে রাস্তায়।

রোজই সূর্য উঠে তবুও একটা অন্ধকার থেকে যায়। অথচ তোমার মনে হয় চারদিকে কত আলো! তুমি বড় হয়েছো। জ্যোৎস্নার আলো গায়ে মাখো। এসবই ঠিকই আছে। এই চন্দ্র সূর্যর যে রাহুগ্রাস হয় তাতে এদের কি ক্ষতি হয় আমি জানি না, তবে পৃথিবীতে উপর আঁধার নেমে আসে

গাণিতিক নিয়মে ১ থেকে ১০০ তে যেতে হয়। তুমি ছোট্ট একটি রাষ্ট্র দেখছো গাঙ্গেয় উপত্যকায়। রাষ্ট্র যারা চালায় তাদের বলে শাসক। মধ্যরাত্রে লবণহ্রদ পাড়ায় রাষ্ট্র কি করে তুমি দেখেছ। দেখেছ রাষ্ট্রের জারজ সন্তান মাথায় হেলমেট, হাতে ঢাল লাঠি টিয়ার গ্যাসের শেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাশে স্ট্যান্ড বাই প্রিজন ভ্যান ও কালো গাড়ি। এই পুলিশ কি কি করেছিল প্রজন্ম প্রজাদের উপর তুমি তো দেখেছো! প্রতিরাধীরা স্তব্ধ করে দিয়েছিল প্রিজন ভ্যান, শুয়ে পড়েছিল তার চাকার তলায়। এটাই রাষ্ট্র. এটাই শাসকের চেহারা।

আজ এই হেমন্তবেলায় তুমি দেখলে প্রকাশ্য রাজপথে বিশাল পুলিশ বাহিনী পুলিশি রাজ কায়েম করেছে।কলকাতায়। কি কি করল রাষ্ট্রীয় ডালকুত্তা? তারা নারীদের গায়ে হাত দিল, তাদের টেনে হিঁচড়ে তুলল। বাংলার পুলিশ প্রতিবাদীকে কামড়ে বিশ্বের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। তাদের অপরাধ হকের দাবিতে প্রতিবাদ করেছিল, বিক্ষোভ দেখিয়েছিল, অবস্থান করেছিল।

আঘাতের নির্মমতায় তারা যখন কাতরাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স নেই। অসহায় আর্তনাদ বাতাসে ভেসে যায়।

তুমি হিটলার কে দেখনি, তুমি দেখনি মুসোলিনি ও ফ্রাঙ্কোক। ফ্যাসিবাদ কাকে বলে, কাকে বলে স্বৈরাচার বইয়ে তো শুধু ইতিহাস লেখা থাকে।
এবার নিজের চোখে দেখলে রাষ্ট্র কাকে বলে, পুলিশিরাজ কি, কাকে বলে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচার। বইপড়া! চোখের চেয়ে বড় আর কে? বইপড়ার আছে কি আর কোনো দরকার?

গণতন্ত্রের সংজ্ঞা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ আমার মুখে না শোনাই ভালো। রাষ্ট্রের সঙ্গে জুড়ে আছে বিজ্ঞান। তাই একে বলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান।
সময় পাল্টায়। নিজের বিচার বুদ্ধিতে বুঝে নাও বহুরূপী গণতন্ত্র। আর দেখো চেহারা তাহার কত প্রকার!

সূর্যাস্ত বেলায় গোধূলির আলোয় বেড়াও, পূর্ণিমা রাতে জ্যোৎস্না মাখো মুখে আপত্তি নেই তাতে। শুধু মনে রেখো মানুষ ছাড়া তৃতীয় কেউ নেই এই মাটিতে। মহাকাশের সব আলো ছুটে আসে পৃথিবীতে।