ক্রমাগত মালবাজার শহরে করোনা গ্রাফ উর্ধমুখী হাওয়ায় চিন্তার ভাজ সমগ্র শহর জুড়েই

অবতক খবর : সৌভিক দত্ত : ডুয়ার্স :    বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই ডুয়ার্সের মালবাজার শহরে করোনা সংক্রামণ আচমকাই বেড়ে যায়। পাশাপাশি ক্রমাগত ঘটতে থাকে মৃত্যু। পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগ জনক হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফে কয়েকদিন আগে থেকেই সমগ্র শহর জুড়েই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে নাগরিকদের কাছে আহ্বান জানান হয়। তারপরেও পরিস্থিতির অবনতি হয়।

এই অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে শহরের ব্যাবসায়ীদের অনুরোধে মালবাজার পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করে সপ্তাহে মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার ও শনিবার শহরের সমস্ত দোকানপাট, হাটবাজার বন্ধ রাখতে অনুরোধ করা হয়। আর মাইকিং হতেই শনিবার শহরে সকাল থেকেই সমস্ত রাস্তাঘাট সুনসান হয়ে যায়। শনিবার শহরের কোন দোকান খোলেনি, সাথে দৈনিক বাজারও ছিল বন্ধ। এমনকি শহরের চা দোকান, পান দোকান গুলন পর্যন্ত বন্ধ ছিল। স্টেশন রোড, ৩১ নং জাতীয় সড়ক , ক্যালটেক্স মোড়,বাজার রোড সহ অন্যান্য রাস্তায় মানুষজনের চলাচল ছিল নগণ্য ।সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর খোলা থাকলেও লোক সমাগম তেমন দেখা যায়নি। শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে বেসরকারি বাস ও উত্তর বঙ্গ রাস্ট্রীয় সংস্থার বাস চলাচল করলেও তাতে যাত্রীসংখ্যা ছিল অন্যদিনের তুলনায় অনেকটাই কম। শহরে শুধু ওষুধের দোকান ও জরুরী পরিষেবার সাথে যুক্ত দোকানগুলিই ছিল খোলা। শহরের প্রাণ চঞ্চল কেন্দ্র ঘড়ি মোড় ও স্টেশন রোড কার্যত এদিন ছিল জনমানবহীন, সুনসান। তবে এদিনের বন্ধের ব্যাপারে রাস্তায় পুলিশ বা পৌর কর্মীদের নামতে হয়নি বরং শহরের মানুষ আতংকে স্বেচ্ছায় নিজেদেরকে একপ্রকার গৃহবন্দী করে ফেলেছেন।

সকালের দিকে এদিক ওদিক পাড়ার মোড়ে কিছু মানুষের জটলা দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথেই সব যেন উধাও হয়ে যায়। দুপুরের পর সবই একপ্রকার সুনসান হয়ে যায়। অনেকেই চাইছেন এই সুনসান অবস্থায় যেন কিছুদিন চলুক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মানুষ নিজেদের কিছুটা গৃহবন্দী করেই রাখুক। এক অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে মালবাজার শহরের আপামোর মানুষ শনিবার যেন এক ঐক্যবদ্ধ ভাবেই সারা দিয়েছেন।

শহরের ব্যাবসায়ী শশীভূষণ দাশগুপ্ত বলেন, ” আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। রোজদিন হাত খাটিয়ে যা উপার্জন করি তাই দিয়েই সংসার চালাই। তবে বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে দুই একদিন দোকান বন্ধ রেখে কিছুটা কষ্ট করতে রাজি যাতে আমরা আমাদের শহরে হটাৎ থাবা বসানো অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে সকলে আবার আমাদের পুরোনো জীবন যাপনের মধ্যে ফিরে যেতে পারি “।