অবতক খবর,২১ জানুয়ারি: করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে তুঙ্গে উঠেছে সংক্রমণ। আর অতিমারীর এই পরিস্থিতিতেও নিজেদের কৌশলকেও তুঙ্গে নিয়ে গেছে প্রতারকরা! যেখানে শুধু বয়স্ক বা নন টেক স্যাভিরাই নয়, প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন বাকিরাও। কারণ আগের তুলনায় প্রতারণার জাল অনেক বেশি বিপজ্জনক! ২০১৮ সালে অর্থাৎ কোভিড পর্যায়ের আগে রাজ্যে সাইবার অপরাধের সংখ্যা ছিল ৩৩৫। আর কোভিড সময়কালে কিংবা পরবর্তীতে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৭১২। যা প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি।

এই ধরনের লিঙ্ক থেকে কীভাবে সাধারণ মানুষকে সাবধান থাকতে হবে?

কীভাবে ব্যস্ত দুনিয়াতে সদা সতর্ক থাকবেন? সাইবার বিশেষজ্ঞ শৈবাল চক্রবর্তী বলেন, “সেক্ষেত্রে দেখতে হবে মোবাইল খুব স্লো রান করছে কি না। যদি তা হয়, হ্যাকড হয়ে থাকতে পারে। সকলের উচিত তিন থেকে ছ’মাস পর পর ফোন ফ্যাক্টরি সেটিংস করান। অ্যাপ এবং ফোনের আপডেট এলে তা ভ্যালিড কি না দেখে আপডেট করিয়ে নেওয়া উচিত। এর ফলে সুরক্ষা ব্যবস্থা বৃদ্ধি পায়।”  বৃহস্পতিবার গিরিশ পার্ক থানার তরফে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এলাকায় সকলকে এই সাইবার ক্রাইম নিয়ে সতর্ক করা হয়।

আগে ফোনে আসা ওটিপি কোনও অজানা ব্যক্তিকে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হত। কিন্তু এবার ফোনে আসা লিঙ্ক ক্লিক করলেই গায়েব হচ্ছে টাকা। কীভাবে সাধারণ মানুষকে সাবধান থাকতে হবে? এ প্রসঙ্গে এথিকাল হ্যাকার সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, “সম্প্রতি কুইক কেওয়াইসি অ্যাপ ব্যবহার করছে হ্যাকাররা। এর মাধ্যমে একটি লিঙ্ক পাঠিয়ে ফোনের সব কন্ট্রোল নিয়ে নেয়। তাই তখন ওটিপি দেখার দরকার নেই হ্যাকারদের। কোনও পেমেন্ট লিঙ্কে ক্লিক না করা ভাল, এটাই বেশি হচ্ছে। যখনই টাকা কাটছে কিংবা এমন কোনও ওটিপি আসছে আগে ফোনের ইন্টারনেট বন্ধ করতে বলা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে হ্যাকাররা ফোনের কানেকশন পাবেন না। ফোন সুইচড অফ নয়। বন্ধ করা উচিত ফোনের ইন্টারনেট এবং ওয়াইফাই কানেকশন।”

সন্দীপ সেনগুপ্ত  এও বলেন, “এখন মূলত তিনভাবে কম আসে। এক টোল ফ্রি নম্বর থেকে। এগুলিকে ধরা খুব সমস্যা। এই নম্বর থেকে কল আসলে সাধারণত ওটিপি চাওয়া হয়, নয় কুইক সাপোর্ট বা কুইক কেওয়াইসি ডাউনলোড করতে বলা হয়, কিংবা কিউআর কোড স্ক্যান করতে বলা হয়। সঙ্গে সঙ্গে তখন অ্যালার্ট হয়ে যাওয়া উচিত।”

ইদানিং ব্যাঙ্কে কেওয়াইসি আপডেটের নামে প্রতারণার ছল সাজিয়েছে সাইবার প্রতারকরা। যার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যদিও ব্যাঙ্কের তরফে বারংবার বলা হচ্ছে এই ধরনের কোনও ফোন বা মেসেজে সাড়া না দিয়ে সরআসরি ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করতে। অপর এক সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যখনই কেউ ফোন করে বা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে বলছে যে আপনার ফোনে এটা ডাউনলোড করুন। তার মানে সেই অ্যাপের মাধ্যমে আপনার ফোন তাঁদের হাতে ভার্চুয়ালি নিয়ে নিচ্ছে হ্যাকাররা।”

টাকা কেটে গেলে বাড়তি টাকা কী আটকানো যেতে পারে? কিংবা হারান টাকা কী ফেরানো যায়? 

আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। এটিকে আটকাতে পারে তেমন নির্দিষ্ট কোনও আইনও নেই। আইটি অ্যাক্ট এসেছে ঠিকই। কিন্তু পাল্লা দেওয়া যায় না এই সকল হ্যাকারদের সঙ্গে। মনে রাখতে হবে ঘরে বসে টাকা আয় করা যায় না।”