নিজস্ব প্রতিবেদক : অবতক খবর : ডুয়ার্স :     কবি মোহিতলাল মজুমদার তার কবিতায় লিখেছিলেন “মধ্য দিনের রক্তনয়ন আধার করিল কে? ধরনীর পর বিরাট ছাঁয়ায় ছত্র ধরিল কে?” কিন্তু মধ্য দিন নয়, বরং বৃহস্পতিবার সকাল বেলার কালবৈশাখীর তান্ডবের জেরে লন্ডভন্ড হলো মালবাজার মহকুমা এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত। ক্ষতি হলো চা বাগানের, বিদ্যুতের তার ছিড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে সমস্যায় পড়ল সাধারণ মানুষ।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডুয়ার্সের মালবাজার মহকুমা এলাকা জুড়েই আকাশের মুখ ছিল ভার। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ আকাশ ঢেকে যায় সম্পূর্ণ কালো মেঘে। ১০.৩০ মিনিট নাগাদ সমগ্র এলাকা জুড়েই শুরু হয় দমকা হাওয়া সাথে মুষলধারায় বৃষ্টি। সেই ঝোড়ো হাওয়ার তান্ডবে মড় মড় শব্দে ভেঙে পড়তে থাকে বিশালাকার বৃক্ষের ডালপালা থেকে, চা বাগানের ছাঁয়া প্রদানকারী গাছ। এলাকায় ভেঙ্গে পড়ে সারি সারি সুপারিগাছ। বিদ্যুতের তারে গাছ পড়ে তার ছিড়ে পড়ে এদিক ওদিক। উড়ে যায় সাধারণ মানুষের ঘরের চালা।
জানাগেছে, নাগরাকাটা ব্লকের খয়েরবাড়ি খাস গুরুং বস্তির কয়েকটি বাড়ির চালা উড়ে যায়। ভেঙে পড়ে সুপারি সহ অন্যান্য গাছ।

মেটেলি ব্লকের নাগেশ্বরী চাবাগানে জেমস খেরিয়ার রান্নাঘরের চালা উড়ে গেলে ক্ষতি হয়। চাবাগানের ছাঁয়া প্রদানকারী গাছও ভেঙ্গে পড়ে। শালবাড়ি এলাকায় বহু সুপারি গাছ ভেঙ্গে পড়ে।মালবাজার শহরে ঝড়ের তান্ডবে বহু দোকানের সাইনবোর্ড উড়ে যায় । কলোনির একাধিক ওয়ার্ডে সুপারি সহ অন্যান্য গাছ ভেঙ্গে পড়ে। নিউমাল জংশন এলাকায় একটি ঘরের চালা উড়ে যায়। তেশিমলা, কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও গাছ পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়।

অপরদিকে মহকুমার বাগরাকোট এলাকার লিসরিভার, ওয়াশাবাড়ি ও অন্যান্য চাবাগানে বহু ছায়া প্রদানকারী গাছ ভেঙ্গে পড়লে চা গাছের ক্ষতি করে।
ওয়াশাবাড়ি চাবাগানের শ্রমিক বিভিষন উরাও বলেন, “ঝড়ে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে সমগ্র এলাকা । অবশ্য ঝড় থামতেই বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করার কাজে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঝাপিয়ে পড়েছে। গজলডোবা এলাকাতেও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে মহকুমা ক্রান্তি এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা পদ্মশ্রী করিমুল হকের বাইক অ্যাম্বুলেন্স এর ওপরে কালবৈশাখীর ঝড়ে বড় গাছ পরে অ্যাম্বুলেন্সটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবশ্য এদিন দুপুরের পর আবার আকাশ পরিস্কার হয়ে যায় এবং ঝলমলে রোদ ওঠে।