মূর্তি বড় না মানুষ বড়? প্রশ্ন তুলে দিয়েছে দেশের জনজাতি? দেশ কার, অনার্য না আর্যদের? লেখক কী বলছে, শুনুন

কারা জাগে
তমাল সাহা

কে জাগে? কারা জাগে ?
মাথা নত হয়ে আসে—
ভারুচ,সোনগাঁ,রাজপিপলা, কেবাড়িয়া
এসব গাঁয়ের নাম শুনিনি তো আগে!

পরিবেশ থমথমে, কান পাতি—
ঘনীভূত হাওয়া, জেগে ওঠে আওয়াজ।
মানি না, মানি না এই জুলুমরাজ।

জনজাতি তুলেছে প্রশ্ন,
উচ্ছেদ করে কোন উন্নয়ন হয়?
ভয় পেতে পেতে তারা এখন নির্ভয়।
তিয়াত্তরটি গ্ৰাম ভেঙে যায়।
পঁচাত্তর হাজার মানুষের রুজির কি হবে?
স্ট্যাচু অব ইউনিটি!
অথর্ব চুপচাপ দাঁড়িয়ে রবে?

এত টাকা আসে কোত্থেকে?
কার পিতৃপুরুষ রেখে গিয়েছিল
তিন হাজার কোটি?
বছর বছর স্বাধীনতা হেঁটে যায়,
ক্লান্ত শরীর আওয়াজ তোলে—
রোটি মাঙতা রোটি…

হাজার হাজার গাছ কাটো তুমি,
এসব দেশের সম্পদ শতাব্দী প্রাচীন।
আমরা জনজাতি জাতীয় পতাকা হাতে এখনো পরাধীন।
কাটো,আরো কাটো আমাদের হৃদয়,
জমি নিয়েছো কেড়ে, এখন জীবন সংশয়।

কোথায় হাসপাতাল, কোথায় স্কুল?
উন্নয়ন! উন্নয়ন! বলে প্রতারণা বিলকুল।
আমরা আদিবাসী স্বদেশ তো আমাদের।
কোথায় আমাদের সুরক্ষা?
অনার্য আমরা!
উড়ে এসে জুড়ে বসা আর্য তোমরা,
মস্তান নাকি? আমাদের উপেক্ষা!

কাশ্মীর থেকে কন‍্যাকুমারিকা
বিশাল বিশাল উঁচু সব পাথর—
নেতাদের চেয়েও বড় তাদের মূর্তি
করতে পেরেছে কি গরিবের উদর পূর্তি?

এখন অন্য আন্দোলন নর্মদা জেলায়—
কালো বেলুন উড়িয়ে,
টায়ার পুড়িয়ে এরা কারা,
অন্য এক লড়াকু মশাল জ্বালায়?

ঐক্যের মূর্তি বানাও?তিন হাজার কোটি!
অন্তরালে দাঙ্গার উস্কানি—
চোখের সামনে ভেসে ওঠে হাজার হাজার রক্তাক্ত মৃতদেহ
দগ্ধ মানুষের কঙ্কাল করোটি।

এই দেশ নিয়ে আমি যাবো কোথায়?
দেশ তো পালাতে জানে না।
আমিও তো থাকবো কোনো সীমারেখায়!
তবে কি স্তব্ধ হয়ে যাবে সব কলরব?
আমাকে থাকবে ঘিরে
শুধু মানুষ আর মানুষের শব!

কোথায় শব?
শবের ভিড় ঠেলে রক্ত-আগুন মেখে
জেগে ওঠে এ কোন নবজাতক!
মুখোমুখি রুখে দাঁড়ায়—
কোথায়, কোথায় পালাস রে ঘাতক!