অবতক খবর ,পুরুলিয়া :  কাঠ মাফিয়াদের হাত থেকে  গাছ বাছাতে অভিনব উদ্যোগ নিতে দেখা গেল কোটশিলা থানার বেগুনকোদর গ্রামের এক বৃদ্ধ দম্পতিকে । শুক্রবার ওই বৃদ্ধ দম্পতি কোটশিলা থানার বেগুনকোদর গ্রামে গোপালবাঁধের পাড়ে আয়োজিত করল অশ্বত্থ ও বটগাছের বিয়ে।  মূলত কুডুলের আঘাত থেকে গাছ বাঁচানোর জন্য। বৃদ্ধ ফটিকচন্দ্র দত্ত (৮৫) এবং তাঁর স্ত্রী শেফালিদেবী ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ।ফটিকবাবু অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। তারা দুজনে মিলে দু’দশক আগে গাছ দু’টি বসিয়েছিলেন। প্রকৃতিপ্রেমী হিসেবেই পরিচিত অঞ্চলে এই দম্পতি,  এইজন্য তারা গাছ লাগাতে ভালোবাসেন। একের পর এক জঙ্গল সাফ করতে দেখে তারা এই বিবাহটি আয়োজন করেছিল গ্রামবাসীদেরকে সাক্ষী রেখে।

মানুষের বিবাহ থেকে কোনো অংশেই আলাদা ছিল না বিবাহটি। ছাদনাতলায় পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ থেকে শুরু করে উলুধ্বনি বরযাত্রী ও কনেযাত্রী এমনকি খাওয়াদাওয়ারও আয়োজন ছিল। সেদিন এই বিয়েটি দেখতে ভিড় জমিয়েছিল বয়স্ক থেকে কচিকাঁচা । কোটশিলার রেঞ্জ অফিসার সোমা সরকার দাস জানান, আগামী ৩ মার্চ বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবসে পুরস্কৃত করা হবে ওই দম্পতিকে।

বৃদ্ধ ফটিকবাবু দিনকাল খারাপ প্রচুর পরিমানে গাছ নষ্ট ও আগামী দিন ভয়ঙ্কর দেখে তিনি ছেলেদের বললেন বড় দু’টি গাছের বিয়ে দিতে ,তা হলে হয়তো ওই দু’টো রক্ষা পাবে। এবিষয়ে তাঁদের ছেলে ধীরেন দত্ত ও হরেন দত্ত বলেন, ‘‘বাবা-মায়ের ইচ্ছাকে মর্যাদা যথেষ্ট মর্যাদা দিয়েছে।  প্রাচীন রীতি অনুযায়ী যে গাছে একবার পূজার্চনা হয়, তা সাধারণত কেউ কাটতে চান না। তা ছাড়া, ধর্মীয় বিশ্বাসের দৌলতে ওই গাছ কেউ কিনতেও চান না।

উচ্ছ্বসিত পরিবেশকর্মী তপনকুমার বিদ, চন্দন চক্রবর্তী জানান, গাছ বাঁচাতে বিয়ে দেওয়ার এই উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়ুক গ্রাম থেকে শহরে। তবেই সবুজ বাঁচানোর আন্দোলনে আরও গতি আসবে, তাদের কাজটি সার্থক হোক।